আরিফ রববানী,ময়মনসিংহ: শেরপুর লেডিস ক্লাব এর উদ্যোগে দরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিতরন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে শেরপুর লেডিস ক্লাবের আয়োজনে কম্বল বিতরণ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক ও লেডিস ক্লাব এর সভাপতি সাহেলা আক্তার। এসময় ৭০জন অসহায় ও ভাসমান মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
পৌষের শুরুতেই শেরপুর জেলায় বেশ ভালভাবেই জেঁকে বসেছে শীত। দিনে সূর্যের দেখা মিললেও সন্ধ্যার পর ঘন কুয়াশা আর হিম শীতল বাতাসের এই শীতকাল সামর্থ্যবান মানুষদের কাছে বেশ উপভোগ্য হলেও অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা রয়েছে নিদারুণ কষ্টে। কোনরকম ছেঁড়া বা তালিজোড়া কাপড় দিয়ে ঠান্ডা আবহাওয়ার মাঝেই শীতের এই প্রতিটি রাত কাটানো যেন তাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।
কিন্তু এরই মাঝে জেলার সদর উপজেলায় ঘুরে ঘুরে ভাসমান ও অসহায় এই শীতার্ত মানুষগুলোর মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে উষ্ণতার পরশ ছড়িয়ে দিয়েছ শেরপুর জেলা প্রশাসন। আর ঠান্ডার মাঝে হঠাৎ শীতবস্ত্র পেয়ে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে শুধু অশ্রুসিক্ত নয়নে ধন্যবাদ জানান আয়োজকদের।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ এনও) মেহনাজ ফেরদৌস,সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা জিন্নাত শহিদ পিংকি,লেডিস ক্লাব এর সদস্য মনিরা তোফায়েল,পুস্প পারভীন,শতরুপা তালুকদার সুস্মি, রিফাহ তাসনিয়া রহমানসহ লেডিস ক্লাব এর সদস্যগণ।
এসময় জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার জানান- শীতের শুরু থেকেই আমরা দরিদ্র জনগণের মধ্যে কম্বল বিতরণ শুরু করেছি।উপজেলা প্রশাসন থেকেও কম্বল প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এই বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
শীতবস্ত্র হাতে পাওয়া ভাসমান মানুষগুলোর অনুভূতি জানতে চাইলে অনেকে জানান, তাদের তিন বেলা পেট পুরে খাওয়া যখন স্বপ্ন যেখানে নেই মাথার উপরে ছাদ সেখানে প্রকৃতিও তাদের প্রতি কঠোর। প্রতি বছর যে কম্বল পায় তারা তা শীত গরম নেই সারাবছর ব্যবহার করতে হয় কারণ তা মাথার নিচে দিয়েই তো রাত কাটে তাদের। প্রতি বছর তীব্র শীতে সরকারি ও বেসরকারি অনেক মানুষ শীতবস্ত্র দিলেও এভাবে শীতের শুরুতে কেউ দেয়না তাই আবেগাপ্লুত হয়ে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তারা।
এদিকে সার্বিক আয়োজন প্রসঙ্গে শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ এনও) মেহনাজ ফেরদৌস জানান, শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার একজন আপামর মানবিক ব্যক্তিত্ব। তার উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জেলার সদর এলাকার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে শীতে শীতবস্ত্র ছাড়াও বিভিন্ন দুযোর্গকালীন সময়ে মানবিক সকল উদ্যোগ পরিচালিত হয়ে থাকে যা সত্যিই সকলকে অনুপ্রেরণা দেয়। তিনি জানান, করোনাকালীন সময়ে শত শত মানুষকে তারা খাদ্য সহায়তা প্রদানসহ ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবে অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেন জেলা প্রশাসন। ভবিষ্যতেও জেলা প্রশাসনের সহযোগীতা ও পরামর্শ মোতাবেক লেডিস ক্লাবের পক্ষ থেকে এমন মানবিক কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।