স্টাফ রিপোর্টারঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ব-পরিবারসহ ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট পাক-প্রেতাত্মাদের কালো থাবায় তৎকালীন সময়ে ক্ষমতা লোভী কিছু সেনা সদস্যদের বুলেটের আগাতে নিহত সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ময়মনসিংহের দক্ষিণ অঞ্চলের জনপ্রিয় নেতা ত্রিশাল পৌরসভা থেকে ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র ত্রিশাল থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল হোসেন চেয়ারম্যানের সুযোগ্য পুত্র আলহাজ্ব এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ।
তিনি ৩আগস্ট দুপুরে পৌরসভা কার্য়ালয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে একান্ত স্বাক্ষাতকারের মাধ্যমে এই বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন,৭৫সালের সেই দূঃসংবাদটি ছিল আমার পরিবারের সবচেয়ে কষ্টের ও আতংকিত । সেই সময় আমি ছোট ছিলাম পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। যদিও ছোট ছিলাম তবে সবকিছু বুঝতে পারতাম। ১৫ আগস্টের সেই কষ্টদায়ক কালো দিবসটির কথা আজো ভুলতে পারিনি। সেই দিনটি ছিল অন্যান্য দিবসের মতই স্বাভাবিক। রাতেও আলাদা কোন অন্ধকার ছিলনা অন্যান্য রাতের মতই ছিলো নীরব রাত । তাড়কা ভরা ছিল আকাশ ঘুমিয়ে ছিল সাড়া বাংলাদেশের মানুষ। সকালে ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠেই সংবাদটা কানে বাজে ১৫ আগস্টের রাতটি শতাব্দীর সবচেয়ে কলঙ্কিত একটি রাত হিসেবে পরিচিতি লাভ করলো । এই রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলেছে ওরা। মেনে নিতে পারেনি আওয়ামীলীগের কোটি কোটি জনগোষ্ঠী।
সেই সাথে আমার পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। বেলা যতই বাড়তে থাকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নেতা কর্মীরা ছুটে আসলো আমাদের বাড়িতে। আমার পিতার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ মিছিল করার প্রস্তুত নিচ্ছিল সবাই। খবর ছুটে গেল বুলেট ধারী বাহিনীর কাছে মহুর্তেই বাড়ি ঘর ঘেরাও। ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল নেতা-কর্মীরা, সেই ছোট্ট বেলার ভয়াবহ স্মৃতি আজো আমায় তারা করে বেড়ায়। সেই দিনটি আমার অতীতকালের রাজনীতিতে ছুটে চলার পথ দেখিয়ে ছিল। ১৯৭৫ সালে আমার পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল হোসেন চেয়ারম্যানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাস কারা বরণ করেন ।
সেই সময় থেকে বঙ্গবন্ধুর ও তার পরিবার বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া তাঁর প্রিয় দল আওয়ামীলীগের প্রতি আমার পরিবারের অন্যএক শ্রদ্ধার অনুভূতির সৃষ্টি হয়।বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আদর্শ আমার পরিবারের জীবন আদর্শ হয়ে যায়। প্রতি বছর ১৫ আগস্ট দলের কর্মসূচীর পাশা-পাশি আমাদের পরিবারেও পালন করা হয় কালো দিবস যা আমরা আজো পালন করি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি প্রিয় নেতাকে।
শেখ মুজিবের রেখে যাওয়া দুই সন্তানের কাছে খোঁজে পায় জাতির পিতার সব স্মৃতি । ১৯৭৯ সালে আমি ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত হই। জয় বাংলার শ্লোগানে যখন আমরা রাজপথে ছিলাম উদ্দেশ্য ছিল একটাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদেরকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশেই হত্যার প্রতিশোধ নিবো। বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে দেশে ফিড়িয়ে আনতে হবে । ১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিড়লেন তখনকার সময় ছাত্রলীগের তরুণ নেতা হিসেবে আমাদের আরেকটি যুদ্ধ করার মত সাহস সৃষ্টি হয়েছিল, তাইতো শ্লোগান করেছি ৭১এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। আমাদের মনে সবসময় বিশ্বাস ছিল একদিন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐ খুনীদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হারানো মসনদ আবারো বঙ্গবন্ধুর কন্যাই বসবেন। তখনকার সময় যারা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী ছিল তারা সবাই এই কথা বিশ্বাস করতো। ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কেউ ছিল না। দুই কন্যা ছিল দেশের বাহিরে আমরা যারা মনের কল্পনা করে আমাদের অনিশ্চিত জীবন নিয়ে দল করেছি পাক প্রেতাত্মাদের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে আজকের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, আমাদের স্বপ্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা পূরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের আমলেই রক্তাক্ত ছাড়াই দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।
আজ ২০২২ সাল শোকাহত আগস্ট মাস এই মাসে জাতির পিতাসহ যারা ৭৫ সালে কালো রাতে পাক প্রেতাত্মাদের বলেটের আগাতে নিহত হয়েছেন সকলের আত্মার প্রতি গভীর ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।