খেলার খবরঃঃ বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর ০৬টায় মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে কোপা আমেরিকার হাইপ্রেসার ফাইনাল ফুটবল ম্যাচ ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা। মেসি বনাম নেইমার! রাত পোহালেই মহারণ।
মহারণ মঞ্চায়ন হচ্ছে ব্রাজিলের ফুটবলতীর্থ মারাকানা স্টেডিয়ামে। তার ওপর এটি হতে যাচ্ছে মেসি কিংবা নেইমারের কোনো একজনের জাতীয় দলের হয়ে বড় কোনো শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপ ঘোচানোর ঐতিহাসিক ম্যাচ। যদি প্রশ্ন করেন কে জিতবে? প্রশ্নটাকে ঘিরে অনুমান বা ভবিষ্যৎবাণী হতে পারে, বিশ্লেষণ করতে পারেন, কিন্তু সরাসরি প্রশ্নটার উত্তর দেওয়ার সামর্থ্য কারও নেই। তবে প্রশ্নটা এই হতে পারে —কে হবেন এবারের কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড়? মেসি না নেইমার?
মেসি আর নেইমার তো এবারের কোপা আমেরিকার হৃৎপিণ্ডই! কী করেছেন দুজন, তার হিসাবে না গিয়ে বরং অন্যভাবে বললে একবাক্যে সবকিছু বলা হয়ে যায়—কী করেননি দুজন! দলকে ফাইনালে তুলেছেন, সে পথে মাঝেমধ্যে কুংফু-কুস্তির ভ্রমে ফেলে দেওয়া কোপা আমেরিকায় নৈসর্গিকতার উপাদান হয়ে ছিল তাঁদের দুই জোড়া বুট।
কোপা আমেরিকার পরিসংখ্যান বলবে, সেখানেও ফরোয়ার্ডদের জন্য প্রযোজ্য প্রায় সব তালিকায় মেসি-নেইমারই সবার ওপরে। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনার ১১ গোলের ৯টিই এসেছে মেসির ছোঁয়ায়, ব্রাজিলের ১২ গোলের ৫টি নেইমারের। দলের গোলে অবদানের হিসাবে এ দুজনের ওপরে বা মাঝে আর কেউ নেই।
৪ গোল করে সেমিফাইনাল পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি, ৫টি গোল করিয়ে টুর্নামেন্টের ‘অ্যাসিস্ট’ তালিকায়ও সবার ওপরে। ২ গোল নিয়ে নেইমার গোলদাতার তালিকার ৩ নম্বরে। মেসি আর তাঁর মাঝে আছেন নকআউট পর্বে এসে ছন্দ খুঁজে পাওয়া আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লওতারো মার্তিনেজ (৩ গোল)। তবে গোল করানোর হিসাবে মেসি আর নেইমারের মাঝে আর কেউ নেই, ৩ গোল করিয়ে সেখানে নেইমার দ্বিতীয়।
ফুটবলের পরিসংখ্যানবিষয়ক টুইটার অ্যাকাউন্ট স্কোয়াকা জানাচ্ছে, টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করা (২০-১৭), সবচেয়ে বেশিবার ড্রিবল করে প্রতিপক্ষকে কাটিয়ে যাওয়ার (৩৩-২৬) হিসাবেও মেসি নেইমারের চেয়ে এগিয়ে। তবে এ দুজনের চেয়ে এগিয়ে বা এ দুজনের মাঝে আর কেউ নেই। নেইমার মেসির চেয়ে এগিয়ে আছেন প্রতিপক্ষের কাছে ফাউলের শিকার হওয়ার তালিকায় (২৫-২২)।
সব হিসাব মেসিকেই দৌড়ে এগিয়ে রাখে। কিন্তু সেসব তো মহারণের আগের হিসাব, কাল ম্যাচে আলো ছড়িয়ে শেষ দানটা পাল্টে দিতে পারবেন নেইমার? তাঁরা দুজন অবশ্য এই ব্যক্তিগত পুরস্কার নিয়ে মোটেও ভাবছেন বলে মনে হয় না! জাতীয় দলে নিজেদের প্রথম বড় শিরোপার অপেক্ষায় তাঁরা—মনোযোগ সব সেদিকেই। সেই শিরোপা না জিততে পারলে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার যে অর্থহীন, সে উপলব্ধি তো সাত বছর আগের জুলাইয়ের এমন এক দিনে এই মারাকানাতেই হয়েছিল মেসির! এবার সে অসহায় উপলব্ধি হবে কার—মেসিই আবার, না নেইমার? তথ্য সূত্র-প্রথম আলো