মেয়ের জন্য পাত্র বাছাইয়ে বাবার অদ্ভুত কৌশল

প্রতিটা বাবার এই কৌশল অবলম্বন করা উচিত

মেয়ের জন্য পাত্র বাছাইয়ে বাবার অদ্ভুত কৌশল

আমার বন্ধু শোভনের বোনের বিয়ের তারিখ ফাইনাল হয়েছে কিছুক্ষন আগে। আমার সৌভাগ্য হয়েছে সেখানে উপস্থিত থাকার।
পাত্র বাছাইয়ের ব্যাপারে বা পাত্র চয়েজের ব্যাপারে যে ক্রাইটেরিয়াকে ফলো করা হয়েছে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করবার লোভ সামলাতে পারছি না। তাই গাড়িতে বসে লিখতে চেষ্টা করলাম।

বন্ধুর বোন ডাক্তার। ওর জন্য গত দুই মাস যাবত পাত্র দেখা হচ্ছে। পাত্র হিসাবে আগ্রহী হয়ে ৮-৯ টি ছেলের বায়োডাটা নানা মাধ্যমে আমার বন্ধুদের পরিবারের কাছে এসেছিল। এর মধ্যে ডাক্তার ছিলো, বিসিএস ক্যাডার ছিলো,ইঞ্জিনিয়ার ছিলো।

শোভনের আব্বা যে ছেলের বায়োডাটা হাতে পেতেন, ঐ ছেলে কেমন তা যাচাই করবার জন্য আগের রাতে চলে যেতেন ঐ ছেলেদের এলাকায়। হোটেল কিংবা কোন আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করে অপেক্ষা করতেন ফজরের আজানের জন্য।
ছেলেদের বাড়ির পাশে যে মসজিদ আছে সেই মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করবার জন্য।
পরপর দুই বা তিনদিন তিনি সে মসজিদে ফজরের সালাত আদায় করতেন।

প্রথম পাঁচটি ছেলের বায়োডাটা হাতে পেয়ে তিনি যথারীতি তাদের প্রত্যেকের বাসার পাশের মসজিদে ফজর আদায় করলেন। সেই পাঁচ জন ছেলের একজনকেও কোনদিন তিনি ফজরের নামাজে মসজিদে উপস্থিত হতে দেখেন নাই।
তাই তাদের ব্যাপারে আর আগ্রহী না হয়ে “না” করে দিলেন।

গত ১০ দিন আগে শোভনদের হাতে আসলো আরেকজন পাত্রের বায়োডাটা।
ছেলে ডাক্তার!

চাচা যথারীতি ঐ ছেলেদের মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে গেলেন।

ছেলেদের বাড়ির ঠিক পাশে একটা পেট্রোল পাম্পে একটা পাঞ্জেগানা মসজিদ আছে।নিয়মিত নামাজ পড়ানোর জন্য ইমাম নাই। সে মসজিদে প্রথম দিন নামাজ পড়তে গিয়ে দেখলেন আজান দেয়ার ও লোক নাই।

চাচা আজান দিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে দেখলেন কুয়াশার চাদর ভেদ করে একজন মানুষ উপস্থিত হচ্ছে। সামনে আসার পর দেখলেন,উনার মেয়ের জন্য যে ছেলের বিয়ের প্রস্তাব এসেছে উনি সেই জন।

প্রথম দিন মসজিদে চাচা ইকামত দিলেন,আর ইমামতি করলেন পাত্র। পরের দিন আবারো গেলেন,সেদিন ঐ পাত্র সহ আরো দুইজন মুসল্লী উপস্থিত ছিলেন।

পরপর তিনদিন শোভনের আব্বা সেই মসজিদে ফজরের সালাত পড়ে এলেন। আজকে সন্ধ্যায় যখন বিয়ের কথা ফাইনাল হওয়ার জন্য আমরা বসেছি। তখন ছেলেটা চাচাকে দেখার পর অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞাসা করলো,

আমি আপনাকেও কোথাও দেখেছি আগে?
তখন চাচা হেসে জবাব দিলেন।
-হ্যা বাবা দেখেছো!
তুমি তিনটি ফজর নামাজে আমার নামাজের ইমাম ছিলে।
আজকের পর থেকে তুমি আমার মেয়ের জীবনের ইমাম।।

বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করেছেন : রাশেদ খান।