ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে নিয়ে শিক্ষকদের মারধর করা এবং এমপিওভুক্তির আবেদনে ঘূষ লেনদেনসহ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এম, রুহুল আমীন ও রংপুর বিভাগ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক মোঃ বাদশা মিয়াকে জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত ভিত্তিহীন ও মিথ্যা-কুরুচিপুর্ণ ভূয়া সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে শিক্ষকরা। এমন সংবাদের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সংবাদটিকে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের সুনাম নষ্ট করার একটা বৃহৎ ষড়যন্ত্র বলেও দাবী করেছেন দেশের মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত বিভিন্ন সংগঠন।
মূলত- মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর হচ্ছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর একটি নবসৃষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান। গত ২০১৫ সালের আগস্ট মাস হতে কাকরাইলের জাতীয় স্কাউট ভবনে সম্পূর্ণ ভাড়া অফিসে এ দপ্তরের কার্যক্রম শুরু হয় । স্বল্প পরিসরে অফিস কার্যক্রম ঠিকমত পরিচালিত না হওয়ায় এবং কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বর্তমানে “গাইড হাউস (৭ম এবং ১০ম তলা ), নিউ বেইলি রোড, ঢাকা-১০০০” ভাড়ার ভিত্তিতে এ দপ্তরের কার্যক্রম সুনামের চলছে ।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৭৯৫৪ টি এমপিও ভূক্ত মাদরাসায় ১,৫০,৮০০ জন শিক্ষক ও কর্মচারীদের প্রতি মাসে বেতন ও ভাতা দেয়া হচ্ছে। এছড়াও ১৫১৯ টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ৪,৫২৯ জন শিক্ষকদের অনুদান দেয়া হচ্ছে। এই বিপুল সংখ্যক মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের প্রশাসনিক এবং একাডেমিক বিষয়ে মনিটরিং এর সার্বিক দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধদিপ্তরের। এ অধিদপ্তরের প্রশাসনিক অধিক্ষেত্র সমগ্র বাংলাদশ। এমপিও ভূক্তকরণ, শিক্ষক এমপিও ভূক্তকরণসহ মাদ্রাসা শিক্ষার একাডেমিক এবং কাঠামোগত উন্নয়নের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়কে পরার্মশ দেয়া এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা অধিদপ্তরের প্রধান কাজ। বর্তমানে মেমিস এর মাধ্যমে অনলাইন পদ্ধতিতে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতন-ভাতা) আবেদন দ্রুতসময়ে প্রক্রিয়াকরণ ও সরাসরি শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রদান/বিতরণ নিশ্চিতকরণ করা হয়।
নানান সমস্যায় জর্জরিত ডুবতে বসা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়টি বর্তমানে যেখানে সুনাম অর্জনে যোগ্য নেতৃত্বের কল্যাণে’, সেখানে অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদে কেবল একজন সৎ, আদর্শবান ও দক্ষ মহাপরিচালক এম, রুহুল আমীন স্যারকে অসম্মানিত হন-নি বরং অধিদপ্তরেরও সম্মানহানি হয়েছে বলে আমরা মনে করেন তারা। অনাকাঙ্ক্ষিত, মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ গোটা শিক্ষক সমাজকে চরমভাবে বিস্মিত, ব্যথিত ও মর্মাহত করেছে বলে দাবী করেন তারা ।প্রতিবেদনে শিক্ষকদের মারধর করা এবং এমপিওভুক্তির আবেদনে স্বচ্ছতা নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তোলায় শিক্ষকগণ বিস্মিত ও হতবিহ্বল। রিপোর্টে নিয়োগের দুর্নীতি তুলে ধরা হয়েছে, এটি মুলত একটা ভূয়া বিষয়,যেকোন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ মুলত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিই তদারকি করেন,ডিজির পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি সদস্য থাকেন। একক ভাবে ডিজির প্রতিনিধি সদস্যের নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ থাকেনা,সুতরাং সেখানে ডিজি বা তার প্রতিনিধির দুর্নীতি /অনিয়ম করার সুযোগ নেই।
শিক্ষক সমাজ বলেন,ফরিদপুরের আদমপুর এ, কে দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার ওয়াহিদুজ্জামান মিয়াসহ ওই মাদ্রাসার আরও দুই শিক্ষক এমপিওভুক্তির আবেদন চুড়ান্ত করতে কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে সংবাদে যে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে তা একটি বানোয়াট তথ্য বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে টাকাটা কয়েকজন কারা নিয়েছেন তার কোন নির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেন নি। পরিদর্শক বাদশা মিয়া স্যারের বিষয়ে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে সেটিও একটি গুজব বলেই মনে করছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অভিজ্ঞমহল। কারণ তার বিরুদ্ধে আদৌ কেন অভিযোগ দায়ের করতে পারনেনি বা কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই তাহলে কি ব্যবস্থা নিবেন কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া তিনি রংপুর বিভাগের পরিদর্শক হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন, তাহলে ফরিদপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বক্তব্য ষড়যন্ত্র মূলক এটা আমরা অনেকেই পরিষ্কার। অথচ যেকোন প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত করতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালা সংশোধন করেছে সরকার। সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী— নতুন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের পাঠদান, একাডেমিক স্বীকৃতি, শিক্ষক-কর্মচারীর সনদ-কাগজপত্র জেলা ও উপজেলার কমিটির মাধ্যমে সরেজমিনে যাচাই করা হবে। এতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেহজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ২৬ (গ) অনুচ্ছের ক্ষমতাবলে ১৭.২ নম্বর সংশোধন করা হয়েছে।
জারি করা পরিপত্র অনুসারে যাচাই শেষে সবঠিক থাকলে প্রতিষ্ঠান প্রধান অনলাইনে আবেদন করবেন। জেলা-অঞ্চল পর্যায়ের কমিটি অনলাইনে পাওয়া আবেদনগুলোর সংশ্লিষ্ট স্তর যাচাই করবেন। যাহা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারেদের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করা হয়। শিক্ষা অধিদপ্তরে কোন প্রকার সিন্ডিকেট নেই,এটা একটা কাল্পনিক তথ্য বলেও মনে করছেন শিক্ষা বিশ্লেষকরা।
শিক্ষক নেতারা বলেন- মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে এম, রুহুল আমীন গত ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যক্রম যেখানে ইতোমধ্যে দেশব্যাপী প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে, স্বচ্ছতা ও সততার প্রতি দেশের মেধাবীদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং ঘুষ-তদবির-অসদুপায় এর চোয়ালে সজোরে চপেটাঘাত করেছে, সেখানে এমপিও নিয়ে এমন প্রশ্ন তোলায় আমাদের মনে সন্দেহের দানা বাসা বাঁধে যে এরা আসলে কী চায়? নিজ স্বার্থে অন্ধ শক্তি একটি স্বচ্ছ এমপিওভূক্তি প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে শুরু থেকেই কাজ করে আসছে,যা শিক্ষক সমাজ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের জন্য লজ্জাজনক এবং হুমকিস্বরূপ।এছাড়া মহা পরিচালক এম রুহুল আমিন এর স্বচ্ছতায় গ্রহণযোগ্য সেবা পেতে শুরু করেছে দেশের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। পাঠ দানে ও গবেষণায় তাদের যথেষ্ট আগ্রহ ও পারদর্শিতা দেখিয়ে যাচ্ছে, তখন এমন বানোয়াট ও অসত্য তথ্য প্রচার শিক্ষকদের হতাশ করে তুলেছেন।
পরিচালক কে, এম, রুহুল আমীন একজন স্বচ্ছ ও শিক্ষকবান্ধব মহাপরিচালক । ১১ তম বিসিএস (প্রশাসন ক্যাডার) এর সদস্য এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব। তার বাড়ী মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলায়।