ভারতের গর্ভে সিনিয়ার আইনস্টাইনের জন্ম সৃষ্টি করল ‘মোদি তরঙ্গ’

ভারতে এক বিজ্ঞান সম্মেলনে বক্তারা উদ্ভট সব দাবি করার পর সে দেশের বৈজ্ঞানিক সমাজ এর প্রবল সমালোচনা করেছে।

বাৎসরিক ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস, যার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাঞ্জাবের জলন্ধরে সোমবার শেষ হয়েছে।

এই সম্মেলনে আগত কোন কোন অংশগ্রহণকারী আইজ্যাক নিউটন এবং আলবার্ট আইনস্টাইনের আবিষ্কারকে ভুল বলে দাবি করেছেন।

হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী এবং ধর্মীয় বিষয়গুলো ভারতের বিজ্ঞান সম্মেলনের এজেন্ডায় আরো বেশি করে জায়গা করে নিচ্ছে।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, চলতি বছরের সম্মেলনে এই ধরনের উদ্ভট দাবি মাত্রা ছাড়য়ে গেছে।

এই সম্মেলনে দক্ষিণ ভারতের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের

প্রধান দাবি করেছেন যে হাজার হাজার বছর আগেই ভারতে স্টেম সেল নিয়ে গবেষণা হয়েছে বলে তিনি একটি হিন্দু ধর্মীয় বইতে দেখতে পেয়েছেন।

 

অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি. নাগেশ্বর রাও আরও বলেন যে রামায়ণের প্রধান চরিত্র রাবণের ২৪ ধরনের বিমান ছিল এবং বর্তমান শ্রীলংকায় তার অনেকগুলো অবতরণ-ক্ষেত্র ছিল।এই সম্মেলনে ভাষণ দেয়ার সময় তামিলনাড়ু থেকে আগত আরেকজন বিজ্ঞানী ড. কে.জি. কৃষ্ণান বলেন, আইজ্যাক নিউটন এবং আলবার্ট আইনস্টাইন দুজনেই ভুল ছিলেন এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির নতুন নাম হওয়া উচিত ‘নরেন্দ্র মোদি তরঙ্গ’।

ভারতীয় বিজ্ঞানী এবং সমালোচকেরা বলছেন, হিন্দ পুরাণের গল্পগুলো উপভোগ করার জন্য। সেগুলোকে বিজ্ঞান হিসেবে দাবি করা মূর্খতা।

ঐ সম্মেলনে যে ধরনের উদ্ভট মন্তব্য করা

হয়েছে তা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে ভারতীয় সায়েন্স কংগ্রেসে অ্যাসোসিয়েশন।

গত বছর ভারতের শিক্ষা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিং এঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক এক পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে রামায়ণে বিমানের কথা প্রথম উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি আরও দাবি করেন যে রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের আট বছর আগেই শিভাকার বাপুজি টালপাড়ে নামে একজন ভারতীয় বিমান আবিষ্কার করেন।

এর আগে ২০১৪ সালে মুম্বাইতে এক হাসপাতালের কর্মচারীদের প্রতি ভাষণ দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন যে হিন্দু দেবতা গণেশ, যার দেহ মানুষের কিন্তু মাথা হাতির, প্রমাণ করে যে প্রাচীন ভারতে কসমেটিক সার্জারির প্রচলন ছিল।

ভারতের রাজস্থান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ২০১৭ সালে বলেছিলেন যে গরু হচ্ছে একমাত্র প্রাণী যেটি একই সঙ্গে অক্সিজেন গ্রহণ এবং নি:সরণ করে।

তথ্য সূত্র-বিবিসি বাংলা