স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি বাতিল না করে নতুন কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা এবং বাতিলের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামীলীগের এক অংশ পৌর শহরে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেন। এতে ফুলবাড়িয়ায় দেখা দিয়েছে মারাত্বক জটিলতা । স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. মোছলেম উদ্দিন ও তারই পুত্র – কণ্যা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। বর্তমান সভাপতি এমপি পুত্র এড. ইমদাদুল হক সেলিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, জালিয়াতি, প্রতারণা ও অবৈধ সম্পদের পাহাড়সহ অসংখ্য অভিযোগ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল মালেক সরকার।
অভিযোগ তুলেছেন ক্ষোদ তারই আপন বোন সেলিমা বেগম সালমা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুল মালেক সরকারও । এতে আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মধ্যে অশান্তি বিরাজ করছে । কমিটি ভেঙে দেয়ারও দাবি করা হচ্ছে । ঘোর অমানিষা কাটছে না ফুলবাড়ীয়ায় উপজেলা আ.লীগের রাজনীতিতে । অভিযোগে প্রকাশ, এমপি পুত্র এড. ইমদাদুল হক সেলিম নিজেকে সভাপতি এবং হারুন উর রশিদ হারুন সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সম্প্রতি ঢাকার কেন্দ্র থেকে একটি অনুমোদন পেয়েছেন । এরপরই শুরু হয় আ.লীগ ঘরোনার রাজনৈতিক ও পারিবারিক তিক্ততা। এর পর থেকেই ফুলবাড়ীয়ায় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে । এই সংকট নিরসনে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে হস্তক্ষেপ চান তারা ।
ফুলবাড়িয়ার সাংসদ এড. মোছলেম উদ্দিন সভাপতি ছিল আগের কমিটির । নতুন কমিটিতে সভাপতি হিসাবে সিভি সংগ্রহ করেছেন । সেই সিভি জমা না দিয়ে এমপি বাবাকে বোকা বানিয়ে ও চাপপ্রয়োগ করে নিজের নামে কমিটি করে এনেছেন এমদাদুল হক সেলিম। এমন টাই দাবি করেন তার বোন সেলিমা বেগম সালমা অভিযোগ উঠেছে, ফুলবাড়ীয়া আওয়ামীলীগে অনেক সুযোগ সন্ধানী ঢুকেছে। ভূমিদস্যু , সন্ত্রাসী, জুলুমবাজ, মাদক কারবারি ঢুকেছে , দুর্নীতিবাজ ঢুকেছে । এমপি পুত্র এমদাদুল হক সেলিম হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন ।
এমপির কন্যা সেলিমা বেগম সালমা বলেন, আমার বাবা সংসদ সদস্য এড. মোসলেম উদ্দিনের সাথে প্রতারণা করে আমার বড় ভাই সেলিম। পরে তিনি সভাপতির পদ বাগিয়ে নেয় । আওয়ামীলীগ তথা সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছে । নিজেকে সভাপতি হিসাবে ঘোষনা আনতে ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগের দুই নেতাদের কয়েক কোটি টাকা ঘুষও দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি আমার ভাই যা এনেছে তা অবৈধ কমিটি । সে দুর্নীতিতে জড়িত।
উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার বলেন সেলিম মাদকের গড ফাদার । প্রায় ২০০ একক জমি দখলকারী সেলিম ও হারুন করেন স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজিও । সেলিম প্রায় অবৈধভাবে কয়েক’শ কোটি টাকার মালিক হয়েছে। সে কোথায় লেখা পড়া করেছে ? এসএসসি পাস করেছে আমি জানি তবে এইচএসসি কোথা থেকে পাস করেছে জানা নেই,তার পিতা এমপি মহোদয়ও জানে না । তার বিতকির্ত কর্মকান্ডের নিন্দা জানাই । তিনি আরো বলেন,রাতারাতি ফুলবাড়ীয়া আ.লীগের সম্মোলনের পর এমপি এড. মোছলেম উদ্দিন মহোদয়ের ছেলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ হারুন নিজেদের নামে অনুমোদন আনেন। আগের কমিটিতে এমপি মহোদয় সভাপতি ছিলেন । কমিটি বাতিল না করেই নতুন কমিটির সম্মোলনের মাধ্যমে করা হয়েছে ।
নবগঠিত ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হারুন উর রশিদ বলেন, মানননীয় এমপি কণ্যা সেলিমা বেগম সালমা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকারের যোগসাজশে বিতর্কিত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । আব্দুল মালেক সরকারের আচরন অশিক্ষিতের মত। ফুলবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল মালেক সরকার বলেন, এমপি মহোদয় অসহায় । আমরাও অসহায় । এর একটা বিহীত হওয়া দরকার । কেন্দ্রীয় নেতাদের সুদৃষ্টি কামণা করি । এড. এমদাদুল হক সেলিম বলেন, বোন ও তার সমর্থকরা আমাকেই শুধু নয় ! আওয়ামীলীগকেও বিতর্কিত করছে । আমি কোন প্রকার দুর্নীত অনিয়মে জড়িত নই । মাদক ব্যবসা করেন উপজেলা চেয়ারম্যনের মেয়ের জামাই । আমি করি না । আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ওরা। সামনে আরো ভাল করবো দেখবেন ফুলবাড়িয়াবাসী ।