নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর বিএনপির নবগঠিত আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পদবঞ্চিত সাবেক নেতারা। তারা অভিযোগ করে বলেন, দলীয় নিয়ম নীতি না মেনে সাবেক ও সিনিয়র নেতাদের অবমূল্যায়ন করে একক আধিপত্য বিস্তার করা জন্য বিএনপির এ পকেট কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা আহবায়ক কমিটি।জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. মাহবুবুর রহমন লিটন বর্তমান ত্রিশাল বিএনপির মূলধারার রাজনীতিকে অবক্ষয়ের পথে ঠেলে দেয়া সহ সিনিয়ার ও সাবেক নেতৃবৃন্দকে দলের বাইরে রেখে দলকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে এমনটাই দাবি করছে সিনিয়ার ও সাবেক নেতৃবৃন্দ।
রোববার( ২০ শে জুন ) পৌর এলাকার লেকেরপাড়ে উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদ আমিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর বিএনপির সাবেক ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, জেল-জুলুম, নির্যাতন ও মামলা-হামলার শিকার হয়েছে।দলের ক্লান্তিকালে দায়িত্বপালনকারী প্রায় শতাধিক উল্লেখযোগ্য সাবেক নেতাকর্মীর জায়গা হয়নি ঘোষিত এ কমিটিতে। এতে করে আগত সময়ে ত্রিশাল বিএনপির রাজনীতি ডা. লিটন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
সাংবাদিকবৃন্দ, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, গত রোববার ১৩ জুন/২১ইং তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ত্রিশাল উপজেলা ৩৯ সদস্য ও পৌর শাখা ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা আহবায়ক কমিটি। ঘোষাণাকৃত আহবায়ক কমিটিতে দলের দুঃসময়ের কান্ডারীদেরকে স্থান দেওয়া হয়নি। বিএনপির নিবেদীত প্রাণ যারা, জেল-জুলুম, মামলা ও হামলার স্বীকার হয়েছে এমন প্রায় শাতাধিত নেতা এই কমিটিতে স্থান পায়নি। কিছু চাটুকার দিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ডা. মাহবুবুর রহমান লিটনের পকেট কমিটি ঘোষণা করে দীর্ঘদিন যাবত যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাদেরকে বঞ্চিত করেছে। একই সাথে দলের এমন দুঃসময়ে ত্যাগী নেতাদেরকে অবমূল্যায়ণ করে ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর বিএনপিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এমনিতেই থানা কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন যাবত দলের কোন কর্মসূচী পালন না হওয়ায় দলের কার্যক্রম খানিকটা ঝিমিয়ে পড়লেও যারা ওই সময়েও মাঠে ময়দানে থেকে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এমন অনেক নেতৃবৃন্দকেও কমিটির বাহিরে রাখা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,গত ভোটার বিহীন নির্বাচনে উপজেলা থেকে ইউনিয়ন,ওয়ার্ড ও কেন্দ্র পর্যায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলকে ভালবেসে নির্বাচন পরিচালনা করেছে এমন নেতৃবৃন্দও আজ হতাশ, তৃণমূলকে সবসময় শক্তিশালী করার কথা বললেও ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি আহবায়ক কমিটির বেলায় তা একেবারে ভিন্ন। তৃণমূলকে অবমূল্যায়ণ করে মাঠ পর্যায়ের নেতাদেরকে বাদ দিয়ে একটি পকেট কমিটির মাধ্যমে ত্রিশাল বিএনপিকে ছন্নছাড়া করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে ডা. লিটন।
একক আধিপত্য বিস্তার করে জেল-জুলুম ও মামলা-হামলার স্বীকার নেতৃবৃন্দ এমনকি দল থেকে যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন বা সাবেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যারা পালন করেছেন এমন নেতাদেরকেও কমিটিতে স্থান না দেওয়ায় নেতৃবৃন্দ আগত সময়ে ত্রিশাল বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে হতাশ।
আরো বলেন,প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা, ত্রিশাল সংসদীয় আসনে বিগত নির্বাচনে যারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদে ত্রিশালবাসীর সুখ,দুঃখের কথা বলেছেন এমন দুইজন সংসদ সদস্য ছিলেন।যাদের অনুপ্রেরণা ও দিক নির্দেশনায় আজকে ত্রিশালে হাজার হাজার বিএনপির কর্মী সৃষ্টি হয়েছে।তারমধ্যে সদর ইউনিয়নের প্রয়াত আবুল মনসুর আহমেদ ও আব্দুল খালেক। এ দুজন সাবেক সংসদ সদস্যের পরিবার এমনকি সাবেক সভাপতি প্রয়াত মাওলানা মুঞ্জুরুল হক,প্রয়াত জালাল উদ্দিন,সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন চেয়ারম্যান প্রমুখ।
( বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ডাঃ লিটন ত্রিশালে তার রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু করার পর নানা ভাবে দলে প্রশ্নবৃদ্ধ হয়েছেন। ত্রিশালের বিএনপির রাজনৈতিক হাহাকার তার হাত ধরেই শুরু তিনি দল থেকে ত্যাগী এবং প্ররিশ্রমী নেতাদের আলাদা করে বাইরে রেখেছেন।সাবেক এমপি প্রয়াত আঃখালেক সাহেব সহ যাদের হাতে ত্রিশাল বিএনপির স্বর্ণযোগ ছিল তাদের বিয়োগ করে নিজের আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে ত্রিশাল বিএনপিতে একটি অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করেন।তার পর তিনি বেছেনেন বড় বড় বাড়ির পয়সা ওয়ালা ক্ষমতাবানদের যাদের শুধু টাকাই সম্ভল জনপ্রিয়তার লেশমাত্র নেই তাদের দলে ভিড়িয়ে ত্যগী পরিশ্রমীদের দূরে সরিয়ে দেন।আর এভাবেই দলের ভেতর থেকে সড়ে আসতে থাকে জনপ্রিয় ত্যগী পরিশ্রমীরা। আজ ত্রিশাল বিএনপি একটি নামমাত্র দলে পরিণত হয়েছে। তার প্রমাণ ত্রিশাল পৌরসভা নির্বাচন লজ্জা জনক হার। এখানেও ডাঃ লিটন তার মর্জি মত প্রার্থী নির্বাচন করেছে ।আরো আসছে………….)
বক্তাগণ অবিলম্বে ঘোষিত পকেট কমিটি বাতিল করে সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে নতুন কমিটি ঘোষণা করতে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের নিকট জোর দাবী জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বইলর ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারন সম্পাদক ইলিয়াছ, সাবেক চেয়ারম্যান ও এমদাদুল হক মানিক, উপজেলা শ্রমীক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিকুল আলম শোভা, মঠবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসলাম হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম মেম্বার, প্রয়াত সাংসদ আব্দুল খালেকের সন্তান বিএনপিনেতা আনোয়ার হোসেন, রামপুর ইউনিয়ন বিএনপিনেতা ফয়সাল আহমেদ, সদ্য সাবেক পৌর বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর শিকদার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন স্বপন, ইউপি সদস্য তোতা মিয়া, আব্দুর রহিম প্রমূখ।