ত্রিশাল উপজেলা প্রেস ক্লাবে কবি নজরুলের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

মোঃ আসাদুল ইসলাম মিন্টুঃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম প্রয়াণ দিবস পালন করেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা প্রেসক্লাব।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে কবির স্বরণে আলোচনা সভা ও দোয়া করা হয়। ত্রিশাল উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি শেখ আরিফ রাব্বনীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ফকরুদ্দীন আহমেদ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অংশ নেন ত্রিশাল বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও বিশিষ্ঠ সাংবাদিক আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর, মানবজমিন ত্রিশাল প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম, দৈনিক সংগ্রাম ত্রিশাল প্রতিনিধি মনির হোসেন, উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক ও সাপ্তাহিক সবুজ সময় ও ত্রিশাল প্রতিদিন -এর ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি, সাংবাদিক মোঃ আসাদুল ইসলাম মিন্টু প্রমুখ। এই জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ। কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে আলোচনা সভা ও নজরুল স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশালে নজরুলের নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্থানীয় সামাজিক সংগঠন গুলো কর্মসূচী গ্রহন করেছেন । এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করেছে।

জনসংযোগ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়েছিল । স্বাস্থ্যবিধি অনুস্বরণ এবং সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিণী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীতজগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করে। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন এবং ধানমন্ডিতে কবিকে একটি বাড়ি দেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকীতে বাণী প্রদান করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, নজরুল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার কবিতা ও গান যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধা ও এ দেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে, উজ্জীবিত করেছে। আন্দোলন সংগ্রামে তার কবিতা-গান আমাদেরকে শক্তি ও সাহস জোগায়।