ফকরুদ্দীন /আজাহারুল ইসলাম:: ময়মনসিংহ ত্রিশাল উপজেলার বর্ষীয়ান আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম। এ নেতা রাজনীতির মেধা প্রমান যোগ্যতা দেখিয়ে নেতা কর্মীদের কাছ থেকে উপাধী পেয়েছিলেন গুরু। সততা ও সাহসিকতা বুকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জীবন পরিচালনা করছেন তিনি। এই নেতার পরিচিতি তিনি ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত নেতা আবুল হোসেন চেয়ারম্যানের ছোট ভাই। তিনি ১৯৬৭সালে আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত হোন।
মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে টকবগে যুবক তাই পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ১৯৭১ সালে টাঙ্গাইলে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়িতে ফেরত এসে বড় ভাই আবুল হোসেনের পরামর্শে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। দেশ স্বাধীন হলে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সাহায্য সহযোগীতা করেন। এরপর ১৯৭৫সাল বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দু’ভাই ত্রিশালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাধে বিভিন্ন আন্দোলন করলে মরহুম আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করলে ছোট ভাই আবুল কালাম ঘরে বসে থাকেনি। পায়ে হেঠে গ্রামের পর গ্রাম দলের জন্য কাজ করে দলকে সুসংগঠিত করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।
ব্যাক্তিগত ভাবে এ নেতা সাধারণ কাঠের ব্যবসা করলেও আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে ছিল আস্থা ও বিশ্বাসের প্রিয় ব্যক্তি। সাদা-সিধে জীবন চলা ছিল তাঁর মূল নীতি। এ নেতা উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০সালে ত্রিশাল পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বৃহত ইউনিয়ন ত্রিশাল এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করেন।
২০০১ সালে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান। উনার নেতৃত্বে সফল একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৮ সালে ত্রিশালে সংসদ নির্বাচনে পরিচালনা কমিটির প্রধান হয়ে বিশাল বিজয় এনে দিয়েছেন। আবুল কালাম ওরফে (গুরু)’র ৫০বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে দলকে উজার করে দিয়ে আসলেও বিনিময়ে দলের কাছে কিছুই চাওয়ার নেই। বিশেষ কোন দিনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফ তাঁর বাসভবনে দাওয়াত দিয়ে শেষে দু’টি প্রশ্ন করেছিল প্রথমটি আপনার গুরু উপাধী কে দিয়েছে? উত্তরে বলেছিল নেতা কর্মীরা। দ্বিতীয় প্রশ্ন করেন, আপনার চাওয়া কি? কিছুই না দলকে ক্ষমতায় থাকতে চাই।
এই দু’টি প্রশ্নের উত্তরে প্রয়াত নেতার খুব কাছে ব্যক্তি হয়ে উঠছিলেন গুরু আবুল কালাম। ত্রিশালে সংসদ নির্বাচন নিয়েও মনোনয়ন বিষয়ে আওয়ামীলীগের প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে একাদিক বার স্বাক্ষাতকারে কথা বলেছেন। পারিবারিক জীবনে ছেলে মেয়েদেরকে আওয়ামীলীগের আদর্শে বড় করেছেন।
গত ২৯শে নভেম্বর এক সাক্ষাতকারে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন নিয়ে বলে, বয়স বেড়েছে কি করব? যে পরিবার গুলো ত্রিশালের আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করেছে সেই পরিবারের লোকজন আজ দলের দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নব্য আওয়ামীলীগদের হাতে চলে যাচ্ছে দল, যারা এক সময় বিএনপি করতো। ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, জানিনা আমি আছি কিনা তবে শুনেছি আমাকে রাখা হয়নি, বিষয়টি আমার কাছে অনেক কষ্টের? তবে এটুকো বলতে পারি, ত্রিশাল আওয়ামীলীগের ভবিষ্যৎ ভালো না।