ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় আতঙ্কিত রয়েছে ময়মনসিংহ নগরবাসী। দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর ময়মনসিংহ নগরবাসীর ভয় যেন আরও বেশি।
ডেঙ্গু নিয়ে কী ভাবছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ডেঙ্গু মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
সিটি কর্পোরেশন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা যায়, তারা পূর্ণ বয়স্ক মশা নিধনে প্রতি এক লিটার কেরোসিনের সঙ্গে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পারমেথ্রিন, শূন্য দশমিক দুই শতাংশ টেট্রামেথ্রিন এবং শূন্য দশমিক এক শতাংশ এস-বায়োঅ্যালাথ্রিন মিশিয়ে ফগার মেশিন দিয়ে ছড়িয়ে দেন। ১০ লিটার পানিতে ৫ মিলিলিটার টেমিফস নামে একটি ওষুধ মিশিয়ে তা মশার লার্ভার প্রজননস্থলে ছিটানো হয়।
সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে মশক নিধন ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধকল্পে ‘নিজ আঙিনা পরিস্কার রাখি, সবাই মিলে সুস্থ্য থাকি’ এই শ্লোগান নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে স্ব-স্ব কাউন্সিলগণের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরন, মাইকিং করা এবং সর্বস্তরের প্রচার-প্রচারণা। ওয়ার্ডের প্রতিটি নালা-নর্দমা, মজাপুকুর পরিষ্কার কর্মসূচী। প্রতিটি ওয়ার্ডে সমগ্র এলাকা,পাড়া মহল্লায় মশার ওষুধ ছিটিয়ে পরিষ্কারকরণ ও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনা পরিষ্কারকরণ।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন (মসিক) মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু জানান, ডেঙ্গু আমাদের কাছে একটা চিন্তার কারণ। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ আসবেন। তাদের মধ্যে কেউ যদি ডেঙ্গুর ভাইরাস নিয়ে আসেন, তা থেকে এখানেও রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা তৈরী হতেপারে।
তিনি জানান, যেহেতু এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহের কেউ আক্রান্ত হয়নি, তাই এটা প্রতিরোধে সবার সচেতন হওয়া উচিৎ। মশাকে মারতে হবে, আর মশা যাতে বংশবৃদ্ধি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেখানে যেখানে মশা ডিম পাড়তে পারে সেই জায়গাগুলো নষ্ট করতে হবে। আক্রান্ত হওয়ার আগেই এদের বংশ নির্মূল করতে হবে। বিশেষ করে যেখানে পানি জমে থাকার সম্ভাবনা আছে সেই জায়গাগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। সবাইকে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায়ই আমরা মশার বংশ বিস্তার ও লার্ভা নষ্ট করে মশার উৎপাদন অনেকটাই কমাতে সক্ষম হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় মেয়র টিটু জনসাধারণের সচেতনতার বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বলেন, মশা উৎপাদন রুখতে জনসচেতনতাও বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যক্তি সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনো উপায় নেই। পানি জমে থাকলে সেখানে এই মশা জন্ম নেবেই। শুধু আমরাই নয়, সকলেরই এব্যাপারে সহযোগিতা করা উচিৎ।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. এবি মো. শামসুজ্জামান সেলিম বলেন, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে এ পর্যন্ত ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ১৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সোমবার (২৯ জুলাই) হাসপাতালে ৫৬ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। ডেঙ্গু রোগীরা হাসপাতালের ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। হাসপাতালের বেডে তাদের জন্য মশারি টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কেউই ময়মনসিংহে আক্রান্ত হননি বলে জানান তিনি। সূত্র: যমুনা নিউজ।