বিশেষ প্রতিনিধিঃ কুমিল্লায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কোরআন অবমাননার ঘটনা নির্ভুল তদন্তের করে শিগগিরই জানগণের কাছে প্রকাশ করবেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন। কুমিল্লার ঘটনায় ০২/০৩ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিনষ্ট করতেই এ ঘটনা। তদন্ত করে শিগগিরই দোষীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।রোববার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এ ঘটনার পেছনে অবশ্যই কোন কারণ আছে। কিছু দিনের মধ্যে আমরা আরও ক্লিয়ার বলতে পারবো। কুমিল্লার ঘটনায় আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি খুব সিরিয়াসলি দেখছেন। আমরা একটি নির্ভুল তদন্তের মাধ্যমে সব ঘটনাটি শিগগিরই আপনাদের জানাবো বলে আশা করছি। আমরা মনে করি আমাদের দেশের লোক ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া ঘটনাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্যই ঘটনানো হয়েছে। এটা যেই করেছেন বা কার ইন্ধনে করেছেন তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। আমরা প্রমাণ পেলেই আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই করবো। এ ধরনের ঘটনা শুধু কুমিল্লায় নয়, রামুতে, নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা করে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিই মূল উদ্দেশ্য। আমাদের দেশের লোক ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। আমরা জঙ্গি-সন্ত্রাসকে কোনো দিন স্থান দেইনি। সবাই একত্রিত হয়ে জঙ্গি-সন্ত্রাসকে দূর করেছিল। এমন একটি পরিস্থিতিতে আবার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে কাদের লাভ হবে? করা এতে লাভবান হবে আপনাদের কাছে সেই জিজ্ঞাসা আমার। আমরা অনেক কিছু দেখছি, অনেক কিছু অনুমান করছি, এগুলো আমরা প্রমাণের অপেক্ষায় আছি। প্রমাণ পেলেই আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
চারজনের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন মন্ত্রী।তিনি বলেন, কুমিল্লার ঘটনার পরপরই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ এলাকায় চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছেন। নোয়াখালী, ফেনী কক্সবাজারে ছোট ছোট ঘটনা ঘটেছে। হাজীগঞ্জ ও নোয়াখালীতে প্রাণহানি হওয়ায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। কোনো ধর্মাবলম্বী মানুষ এই কাজটি করতে পারে না । সবাই ধর্মভীরু, যার যার ধর্ম সেই সেই পালন করেন। কাজটি যেই করেছেন উদ্দেশ্যমূলকভাবে করেছেন, যে করেছেন কারো ইন্ধনে এবং স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে বিনষ্ট করতে করেছেন, আমরা সবকিছুই তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব, যাতে করে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার প্রয়াস যেন কেই না পায়। তবে দেশের বাইরের কারো ইন্ধন আছে কিনা? এ মুহূর্তে আমি কিছুই বলছি না। আমাদের দেশের লোকেরই তো অভাব নেই। দেশের বাইরে থেকে কলকাঠি কেউ নাড়ছে কিনা সেগুলোও তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সরকার তাদের এজেন্সি দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই অনেক কিছু বলেন যেগুলো তথ্যভিত্তিক নয়, উদ্দেশ্যমূলক, এগুলো বলার জন্য বলেন। ভারতের কোনো এজেন্সির সম্পৃক্ততা আছে কিনা? প্রধানমন্ত্রী বিশ্লেষণ করতে বলেছেন এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন তার কাছে তথ্য রয়েছে, সেই অনুযায়ী তিনি বলেছেন।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাতের পর থেকে আর কোনো ঘটনার কথা শুনেননি জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। তারা যথেষ্ট ধৈর্যের সঙ্গে তারা কাজ করছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কাজ করি। একটা শান্তির পরিবেশ চলে আসছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যেই চেষ্টা করুক সফল হবে না।