গণতন্ত্রের মানসকন্যা উন্নয়নের কারিগর সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্যের শুরুতে নেতাকর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা এবং শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়া মানেই হচ্ছে অত্যাচার, মানুষকে শোষণ করা, বঞ্চনা করা আর। আওয়ামী লীগ মানুষকে উপহার দেয় উন্নয়ন। আমরা আজ শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। আমরা নতুন নতুন স্কুল করেছি। ২৬ হাজার নতুন প্রাইমারি স্কুল সরকারিকরণ করেছি। আজকে আমাদের স্বাক্ষরতার হার ৭৫.২ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন- ২০০১ সালে আমরা যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রেখে যাই। এরপর আসে লুটেরার দল, সন্ত্রাসীর দল বিএনপি; তারা আবার বাংলাদেশকে খাদ্যে ঘাটতির দেশে পরিণত করে। ২০০৯ সালে আবার যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখি সেই ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি। আল্লাহর রহমতে দেশে এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য এখন মজুত আছে।
শনিবার (১১ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের একটি মানুষও যেন ভূমিহীন না থাকে সে জন্য কাজ করছি। আমাদের এটাই লক্ষ্য ছিল, আর আমরা সেটা করে দেখিয়েছি। গৃহহীন বা ভূমিহীন মানুষ এখন একটা ঠিকানা পাচ্ছে- এর চেয়ে বড় কাজ আর কিছু হতে পারে না।
তিনি বলেন, তিন বছর সাত মাস তিন দিন জাতির পিতা দেশ গড়ার সময় পেয়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার কাজ করেন। সংবিধান প্রণয়ন করেন। অশ্রুসজল কণ্ঠে ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ও ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গেছি। আওয়ামী লীগের সভাপতি করার পর দেশে আসার সুযোগ হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য, আমার বাবা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার তা বাস্তবায়ন করা। আমি আপনাদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছি। উদ্বোধন করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাসে ৭৩টি প্রকল্প উদ্বোধন করে দিয়ে গেলাম, সেগুলো যত্নে রাখবেন। এরপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা ৩০টি প্রকল্প পড়ে শোনান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর ময়মনসিংহ বিভাগ করে দিয়েছি। প্রতিটি বিভাগের মতো এ বিভাগে ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, একটি পৃথক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব। আমরা অনেক কিছু করতে পারতাম। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয়নি।
এর আগে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে জনসভাস্থল সার্কিট হাউস মাঠ থেকে একযোগে ১০৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং প্রায় ২ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে জনসভা মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী।
জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।