ষ্টাফ রিপোর্টারঃ ময়মনাসিংহ জেলার গফরগাঁও থানাধীন রৌহা কালীরঘাট গোদারাঘাট সংলগ্ন পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে পাওয়া অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২৫) এর ভাসমান লাশের পরিচয় শনাক্ত করেছে ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন সিবিআই।
এর আগে গত ২০ শে আগষ্ট অনুমান ১৩.৩০ ঘটিকায় ব্রহ্মপুত্র নদে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পিবিআই । স্থানীয়রা দুপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহ ভাসতে দেখে থানায় খবর দেয়। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন। এ সংক্রান্তে গফরগাঁও থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।
যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ, সিআইডি ও ডিএমপি’র পাশাপাশি পিবিআই ময়মনসিংহ জেলাও ছায়া তদন্ত শুরু করে।
ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার এর দিক নির্দেশনায় ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের সার্বিক সহযোগিতায় পিবিআই ময়মনসিংহ টিম কর্তৃক রাজধানীর ধানমন্ডির সাত-মসজিদ রোডে “গ্লোরিয়া জিন্স” কফি শপের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ হতে সংগৃহিত একটি ছবির সাথে ডিসিস্টের পরিধেয় শার্ট, প্যান্ট ও জুতার মিল পায় পিবিআই। এছাড়াও মরদেহ উদ্ধারের সময় ডিসিস্টের প্যান্টের পকেটে পাওয়া “গ্লোরিয়া জিন্স” এ গত ১২/০৮/২০২৩ তারিখ রাত ১০.২৯ মিনিটে ডিসিস্ট দ্বারা পরিশোধিত ৭৭০/- টাকা বিলের রসিদের সাথে মিল পায় পিবিআই। পরবর্তীতে পিবিআই কর্তৃক “গ্লোরিয়া জিন্স” কফি শপ এর সিসিটিভি ফুটেজ থেকে অজ্ঞাত যুবকের ছবি সংগ্রহ করা হয়। অজ্ঞাত যুবকের পরিচয় শনাক্তে পিবিআই সন্ধান চেয়ে পিবিআই’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার শুরু করা হয়। এছাড়াও ঘটনাকালীন সময়ে সারা বাংলাদেশের মিসিং জিডিও পর্যালোচনা করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮/০৮/২৩ তারিখ দিবাগত রাত ০২.০০ ঘটিকায় ঢাকা হতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার ডিউটি অফিসারের নম্বরে ফোন দেন এবং জানান যে, অজ্ঞাত যুবককে তার কাছে চেনা মনে হয়। যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হতে তিনি ঢাকার অন্য এক ব্যক্তির নম্বর প্রদান করেন। পিবিআই হতে উক্ত নম্বরে যোগাযোগ করা হলে এবং তাকে ডিসিস্টের ছবি দেয়া হলে তিনি অজ্ঞাত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করেন। জানা যায়, ডিসিস্টের বাড়ী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায়। দুই/তিন যাবত ডিসিস্টকে খুঁজে না পাওয়ায় তার পিতা মোহাম্মদপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। ডিসিস্ট ঢাকার একটি ইংলিশ মিডিয়ামে এ-লেভেলের শিক্ষার্থী। সে পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করতে না পারায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। অদ্য ২৯/০৮/২০২৩ তারিখ দুপুর অনুমান ০৩.০০ ঘটিকায় ডিসিস্টের পিতা ভৈরব নৌ-পুলিশ থানায় যান এবং সেখানে সংরক্ষিত ডিসিস্টের পরিহিত শার্ট, প্যান্ট ও জুতা দেখে প্রাথমিকভাবে ডিসিস্টকে তার নিজের ছেলে বলে শনাক্ত করেন। উক্ত ঘটনায় পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা কর্তৃক ছায়া তদন্ত অব্যাহত আছে। যেখানে পোস্ট মর্টেম রিপোর্টসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করা হবে।
ব্রহ্মপুত্র নদে পাওয়া অজ্ঞাত যুবকের পরিচয় দ্রুত শনাক্তে সহযোগিতা করায় পিবিআই, ময়মনসিংহ এর পক্ষ থেকে জেলার পুলিশ সুপার মহোদয় পুলিশের সকল ইউনিট, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও এ মহৎ প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করা সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পিবিআই, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার।