হার্ট অ্যাটাক : জীবন রক্ষাকারী ইনজেকশন এখন বিনা মূল্যে !

ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: হার্ট অ্যাটাকের পর ধমনিতে জমাট বেঁধে যাওয়া রক্ত গলিয়ে দেওয়া জীবন রক্ষাকারী Injection Streptokinase (স্ট্রেপটোকাইনেস ইনজেকশন) এখন রোগীদের বিনা মূল্যে দিচ্ছে ঢাকার জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। হার্ট অ্যাটাক করে কেউ ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গেলে তিনি বিনা মূল্যে এই ইনজেকশন পাবেন। হাসপাতালের বাইরের ওষুধের দোকানে এর দাম ৪৫০০ – ৫৫০০টাকা।

হাসপাতাল সূত্র জানা যায়, অধ্যাপক আফজালুর রহমান হাসপাতালটির পরিচালক হবার পর রোগীদের বিনামূল্যে এই ইনজেকশন দেওয়ার আদেশ জারি করেন এবং নির্দেশ দেন কোনো নার্স বা চিকিৎসক এই ইনজেকশন রোগীদের দিয়ে বাইরে থেকে কিনে আনালে বা কেনার পরামর্শ দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, আগেও কিছু কিছু রোগীকে এই জীবন রক্ষাকারী ইনজেকশন বিনামূল্যে দেওয়া হতো।কিন্তু রোগীরা তা না জানার কারণে অসাধু নার্স, কর্মচারীরা সেগুলো থাকা সত্ত্বেও রোগীদেরকে হাসপাতালের বাইরে থেকে এই ইনজেকশন ক্রয় করাতো এবং পরে হাসপাতালের ইনজেকশন ব্যবহার করে তারা ব্যক্তিগত লাভবান হতো।বর্তমানে সকল রোগীকে এটা প্রদানের সুযোগ করে দেওয়ায় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অসৎ সুবিধা পাচ্ছে না।তারপরও যদি কাউকে এই ইনজেকশন ক্রয়ের কোন স্লিপ দেওয়া হয় তারা যেন সেটা সংরক্ষণ করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে।

হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, হার্ট অ্যাটাকের পর রক্ত জমাট বেঁধে যায়। জীবন রক্ষাকারী এই ইনজেকশন দেওয়ার পর জমাট বাঁধা রক্ত তরল হয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয় এবং হৃদ্‌যন্ত্র সচল হয়। যত দ্রুত শিরায় এই ইনজেকশন দেওয়া যাবে, হার্টের পেশী তত ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আফজালুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে এই ইনজেকশন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা কিনতে পারলেও গরিব-অসহায় রোগীরা তা পারেন না। মূলতঃ গরিব অসহায় রোগীর কথা বিবেচনা করে হাসপাতালের নিজস্ব বরাদ্দ থেকে সম্প্রতি এই ইনজেকশন কেনা হয়েছে।

অধ্যাপক আফজালুর রহমান আরও বলেন, গত বছর ২০১৭ এর জানুয়ারিতে পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরই জরুরি বিভাগে ইকোকার্ডিওগ্রাম যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ইসিজি, কার্ডিয়াক মনিটর, ডি-ফেব্রিলেটর যন্ত্র বসিয়ে জরুরি বিভাগকে একটি ছোট সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) রূপান্তর করা হয়েছে।

হাসপাতালটি ৪১৪ বেডের হলেও হাসপাতালে সার্বক্ষণিক ৮ শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে।হাসপাতালটি আরো আধুনিকীকরণের পাশাপাশি ১০০০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। এটা দেশের একটি জরুরী হাসপাতাল হওয়ায় বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যার দিক দিয়ে ্দ্বিতীয় অবস্থানে।

(উল্লেখ্য, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঢাকার শেরে বাংলা নগর এলাকায় অবস্থিত একটি সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতাল যেখানে শুধু হৃদরোগের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।কেউ কেউ এটাকে ভুলে মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সাথে মিলিয়ে ফেলেন।)