শ্রম আইন সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের বিষয়টিও সংস্কার আইনে থাকবে। তবে কবে নাগাদ নতুন এই আইন বাস্তবায়ন হবে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ ২০২২ উপলক্ষ্যে দোহায় বহু অভিবাসী শ্রমিক কর্মরত আছেন। শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতের জন্য বরাবরই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে কাতার। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই অভিবাসী শ্রমিকদের মজুরির বিষয়টি নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগ্যানাইজেশনের (আইএলও) একটি বৈঠকের একদিন আগেই ন্যূনতম মজুরির বিষয়ে ঘোষণা দিল কাতার। অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগের অভিযোগ এনে এর আগে সংস্থাটির পক্ষ থেকে কাতারকে সতর্ক করা হয়।
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন (আইসিটিইউ) কাতারের নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থাটির মহাসচিব শারান বুরো জানিয়েছে, এই পরিবর্তন বাস্তব সংস্কারের ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং এর ফলে আধুনিক দাসত্বের নিষ্পত্তি ঘটবে।
নভেম্বরের মধ্যে কাতারের এই সংস্কারের সময়সীমা বেধে দিয়েছে আইএলও। ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মকর্তারা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
দীর্ঘদিন ধরেই কাফালা পদ্ধতি চালু ছিল কাতারে। এই পদ্ধতির কারণে বিদেশী শ্রমিকরা তাদের মালিকদের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও চাকরি বা দেশ ছাড়ার অনুমতি পেতেন না।
গত বছরের ডিসেম্বরে কাফালা পদ্ধতির বাতিল করে কাতার। এই পদ্ধতির কারণে অ্যামনেস্টিসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিতর্কের মুখে পড়তে হয়ে কাতারকে।
কাতারে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ প্রবাসী শ্রমিক রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই নির্মাণ শিল্পে কাজ করে যাদের বেশির ভাগই এসেছে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে।
২০১৩ সালের এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালের ওয়ার্ল্ডকাপের নির্মাণ প্রকল্পে কমপক্ষে ১২শ শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত শ্রমিকের সঠিক সংখ্যা যাচাই করা কঠিন। তবে ২০১৫ সালে বিবিসির এক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, নিহতের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে এবং তা আরো বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।