বিশেষ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কারের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ৭ নং ঘোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে পোষ্টার ও প্রচারপত্রে পূর্ববর্তী পদ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে মাহবুবুল আলম মনির বিরুদ্ধে । সম্প্রতি মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইমার্জেন্সিতে দায়িত্বরত ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম মনিকে বহিষ্কার করা হয় ।
সেসময় দলীয় সিদ্ধান্তে বহিষ্কারকারী ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম বহিষ্কারের বিষযটি নিশ্চিত করেন। দলীয় রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনা, সন্ত্রাস, দুর্নীতির লাগাম টানতে যুবলীগের এটি কার্যকরী সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয় ।
এদিকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল উপলক্ষে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত একাধিক অধিবেশনেও মাহবুবুল আলম মনি যুবলীগ সভাপতির পদ ব্যবহার করে কর্মসূচীতে অংশ নেয় বলেও অভিযোগ দলীয় নেতা-কর্মীও । তার এহেন কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও তাকে দমাতে বা লাগাম টেনে ধরতে পারেনি ক্ষমতাসীন দলের অর্থাৎ যুবলীগের নিতী নির্ধারক নেতৃবৃন্দ । কে বা কার প্রশ্রয়ে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন মাহবুবুল আলম মনি । এমন প্রশ্ন উঠেছে ।
জানা যায়, মাহবুবুল আলম মনি বিগত বিএনপি জামায়াত সরকারের আমলে উপজেলা ছাত্রদলের সহ – সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন । মনির শশুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার ।
যুবলীগের উর্ধ্বতন একজন নেতা বলেন, দলের গঠনতন্ত্র ও আইন মেনে সকলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলে তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। নেতা বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর যারা যুবলীগে ঢুকেছেন, তাদের সঙ্গে কিছু কিছু স্বার্থান্বেষীও ঢুকেছে ।
জানা যায়, গত ৬ জুলাই বেলা ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে মাহবুবুল আলম মনি হাসপাতালে কর্মরত ইমার্জেন্সি বিভাগের ডাক্তার সালেকিন মামুনকে হাসপাতালের হটলাইন নাম্বারে ফোনে বলেন, আমার মায়ের করোনা ভাইরাস নমুনা টেস্ট করাতে হবে। নমুনা নেওয়ার জন্য বাসায় একজন লোক পাঠান। প্রত্যুত্তরে ডাক্তার সালেকিন বলেন, আপাতত বাসায় গিয়ে নমুনা নিয়ে আসার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আপনার মাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে টেস্ট করাতে হবে। একথা শুনে মোবাইল কেটে দিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে সহকর্মী ৭/৮ জন ক্যাডারদের নিয়ে ইমার্জেন্সি বিভাগে আসেন মনি। এসময় দরজা বন্ধ করে ডাক্তারকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন তিনি। পরে তার সহযোগীরা ডাক্তারকে কিল-ঘুষি, চর-থাপ্পড়সহ ব্যাপক মারধর করেন। পরে হাসপাতালের কর্মরত স্টাফরা এসে হামলাকারীদের কবল থেকে ডাক্তারকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার পর জরুরি বৈঠক করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সালেকিন মামুন বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে মুক্তাগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাদিক মামলা, সেগুলো বিচারাধীন রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগের সভাপতির পদ বাগানোর পর মাহবুবুল আলম মনি বেপরোয়া হয়ে উঠে । পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা এমনকি দলীয় নেতা- কর্মীদেরকেও মারধরের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে ।
এবিষয়ে মাহবুবুল আলম মনির সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন রিসিফ করেননি।