স্টাফ রিপোর্টার : মাদক, দুর্নীতি , অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করার জের ধরে কক্সবাজারে আলোচিত ওসি প্রদীপের মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা এবং ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির এসআই আক্রামের রোষানলে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা । পুলিশ কর্তৃক ও প্রভাবশালীদের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস নিলেও ভূক্তভোগী সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দুর্বিষহ জীবন ।
জানা যায়, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে কক্সবাজার বানী পত্রিকার সম্পাদক ও দৈনিক আমাদের সময়ের আবাসিক সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খানকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয় । বিনা ওয়ারেন্টে ঢাকা থেকে ধরে নিয়ে টেকনাফ থানায় তিনদিন আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতনের পর পৃথক ৬টি মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয় । বর্তমানে সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন ।
অপরদিকে ২০২০ সালে ফরিদুল মোস্তফা বাদী হয়ে সাবেক ওসি প্রদীপ এবং তার ২৬ পুলিশ সদস্য ও চার মাদক ব্যবসায়ীসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন । সেই মামলার প্রতিবেদন জমা দিতে ৫ম বারের মতো সময়ের আবেদন করেছে পিবিআই। সম্প্রতি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেরিন সুলতানের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক কায়সার হামিদ এ আবেদন করেন। অপরদিকে মাদকের বিরুদ্ধে রিপোর্টেও প্রেক্ষিতে ফরিদুল মোস্তফা খানের বিরুদ্ধে পুলিশের ৬ মামলা এখনও প্রত্যাহার হয়নি। এ অবস্থায় একদিকে নিজের মিথ্যা মামলা, অপরদিকে মামলা-হামলায় জড়িতদের শাস্তি ও ন্যায়বিচারের দাবিতে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান।
অপরদিকে দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক, আমাদের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি খায়রুল আলম রফিক ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সংবাদপত্রে ময়মনসিংহ অঞ্চলে মাদক, দুর্নীতি অনিয়মের সংবাদ করেন । এরই ধারাবাহিতায় দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকা কর্তৃপক্ষের বিবাদকে কেন্দ্র করে এক পক্ষের হয়ে রফিককে আটক করে নির্যাতন করেন, জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের তৎকালীন এসআই আক্রাম হোসেনসহ কয়েকজন। ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থার এসআই আক্রাম হোসেন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করান। প্রতিকার চেয়ে ময়মনসিংহ জেলা জজ আদালতে ২০২০ সালে এসআই আক্রামসহ পুলিশের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন ।
সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা জানান, পুলিশের সাজানো মামলায় আদালত প্রাঙ্গণে বেশিরভাগ সময় কাটে দুই সাংবাদিকের । মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে সব খুইয়েছেন তারা । তাদের কাছে এখন টাকা পয়সা নেই বললেই চলে। পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটছে ।
ঐ দুই সাংবাদিকের পরিবারের লোকজন জানান, পুলিশের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের পর পুলিশ কর্তৃক অমানুষিক নির্যানের শিকার হওয়ার পর দীর্ঘদিন জেলখানার কুঠুরিতে দিন কাটে তাদের। লোকজনের গঞ্জনায় আর অভাব অনটনে স্বীকার হই আমরা ।
মানবাধিকার কর্মী আমিনুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক ও ফরিদুল মোস্তাফা দুজনেই মেধাবী সাংবাদিক। দুর্নীতি অনিয়ম মাদক নিয়ে লেখালেখি করাটাই তাদের জীবনের কাল । তারা দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে তাদের দায়েরকৃত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের আইনের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিচার বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের তড়িৎ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।