ময়মনসিংহের ত্রিশালে ভাড়ায় চালিত মোটরবাইক চালক জুবায়েদ আহমেদ (৩১) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পি বি আই এবং ঘটনা সাথে জড়িত ০৩ জনকে গ্রেপ্তার সহ মোটর-সাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলো- ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে নাজমুল ইসলাম (৩০), জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় উজানপাড়া এলাকার মৃত.আবুল হাসেমের ছেলে আবুল কাশেম ওরফে সোনা মিয়া (৫৫) এবং বাট্টাজোড় নতুনবাজার এলাকার আব্দুল হামিদের পুত্র আব্দুল আজিজ ওরফে আনিছ (২৪)।
বুধবার রাতে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানাধীন বাট্টাজোড় এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ময়মনসিংহ।
পুলিশ জানায়, গত ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ সকাল পৌনে ০৮ টায় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের বৈলর ইউনিয়নের কামারপাড়া হতে বকশীপাড়া গামী রাস্তা সংলগ্ন পুকুরের দক্ষিণে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মৃতদেহ মিলে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে উক্ত অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে।
জানা যায়, অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির নাম জুবায়েদ আহমেদ(৩১)। সে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ সুয়াইর ইউনিয়নের সামাদ তালুকদারের ছেলে। পুলিশের মাধ্যমে খবরটি নিহত পরিবারকে জানিয়ে পরে নিহতের বড় ভাই আজহারুল ইসলাম ত্রিশাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এবং গত ০৭ জানুয়ারি পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা স্বউদ্যোগে মামলাটি অধিগ্রহণ করে তদন্ত শুরু করেন। পিবিআই তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ০৯ দিনের মাথায় হত্যাকান্ডে জড়িত অজ্ঞাত আসামীদের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামী নাজমুলের বাড়ী ত্রিশালের বৈলরে। দীর্ঘ ০৫ থেকে ০৬ বছর যাবত সে টঙ্গীতে ওয়েলডিং এর কাজ করত। নিহত জুবায়েদের বাড়ী নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে। সে মিরপুরের শিয়ালবাড়ী থেকে বাইক রাইডার হিসেবে কাজ করত।
গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৪ নাজমুল টঙ্গী হতে ময়মনসিংহ শহরে আসা-যাওয়ার কথা বলে জুবায়েদের মোটর-সাইকেল ভাড়া করে। বৈলরে পৌঁছার পর আসামী নাজমুল পাওনা টাকা নেয়ার কথা বলে জুবায়েদকে নিয়ে ঘটনাস্থল এলাকায় যায়।
একপর্যায়ে আসামী নাজমুল বাইক রাইডার জুবায়েদের গলায় থাকা চাদর দিয়ে ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করে এবং জুবায়েদ এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মোটর-সাইকেল নিয়ে চলে আসে। আসামী নাজমুল ডিসিস্টের মোবাইল ফোনটিকে ধানিখোলা বাজারে জনৈক খোকন মেকারের কাছে ২০০ টাকায় বিক্রি করে এবং মোটর-সাইকেল নিয়ে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানাধীন বাট্টাজোড় এলাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। ০২ থেকে ০৩ দিন পর নাজমুল মোটর-সাইকেলটি বাট্টাজোড় এলাকায় তার পরিচিত আসামী সোনা মিয়ার কাছে বিক্রি করে। আসামী সোনা মিয়া আবার মোটর-সাইকেলটি তার ভাতিজি জামাই আব্দুল আজিজ ওরফে আনিছ এর হেফাজতে রাখে।
তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত সকল আসামীকে গত ০৮ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুইজন আসামী বিজ্ঞ আদালতে নিজেদের সম্পৃক্ত করে ঘটনার বিবরণ উল্লেখপূর্বক ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।
ত্রি/প্রতিদিন ডেস্ক