বাকৃবি প্রতিনিধি:: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বাকৃবি) ভিসি সচিবালয়ে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদের কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবি নিয়ে কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই হঠাৎ উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করে হট্টগোল ও উত্তেজিতহয়ে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, পূর্ব নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী দুপুর ১২টায় ভিসি কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করেন। সাড়ে ১২টার দিকে কোন অনুমতি ছাড়াই প্রায় ৩০-৩৫ জন কর্মকর্তা ভিসির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উপাচার্যের সাথে উত্তেজিতভাবে কথা কাটাকাটি ও গালিগালাজ করতে শুরু করে। এসময় প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান অফিসারদের সবাইকে হট্টগোল না করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কথা বলতে ও আলোচনায় বসার কথা বলেন। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে এবং উপাচার্য, রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত), প্রক্টর, ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) সামনেই অফিসাররা উপ-উপাচার্যের দিকে তেড়ে যায় এবং গালিগালাজ করতে থাকে। কর্মকর্তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মো. খাইরুল আলম নান্নু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল উত্তেজিতভাবে তেড়ে যায়। পরে নিজের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এসময় ঘটনাস্থলে প্রক্টর এবং ভারপ্রাপ্ত ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা উপস্থিত থাকলেও কোন প্রদক্ষপ নিতে দেখা যায়নি।
এই বিষয়ে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান বলেন, আমি অফিসার পরিষদের নেতাদের কথা বলতে এবং অন্যদের সাপ্লিমেন্ট করতে বলি। এতে ওরা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবকের সামনে অফিসারদের এমন আচরণ নিয়মবহির্ভূত।
এরপর কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের হাত ধরে টানাটানি শুরু করে এবং কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অফিসাররা বিভিন্ন সময় আমাকে তাদের দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করতে বলে। ভিসি স্যারের আমন্ত্রণে একটি অনুষ্ঠানে থাকায় আমি তাদের সাথে যোগ দিতে পারি নি।
ঘটনার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অফিসার পরিষদের যুগ্ন-সম্পাদক জিয়াউল হক টিটু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল, মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, সংস্থাপন শাখার মোহাম্মদ আশিকুল আলম বাচ্চু, এনামটি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের সেকশন অফিসার মো. মেহেদি হাসান রাসেল। এসময় তারা বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকী দেয় এবং ছবি মুছে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
সাংবাদিকদের সাথে কয়েকজন কর্মকর্তার এমন আচরণে দুঃখ প্রকাশ করে অফিসার পরিষদের সভাপতি মো. আরিফ জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টা অনাকাঙ্খিত এবং দুঃখজনক। বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনের উপর ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পক্ষের বিভিন্ন বিষয়ে দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে। দাবিগুলো একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। হুট করে প্রশাসনের সর্বোচ্চ বডির সাথে এ ধরণের উদ্যেত আচরণ কখনো কাম্য নয়। আমরা শিক্ষক সমিতি ও গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।