ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ দাবী করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে, সংসদ ভেঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনকালীন সময়ে নতুন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন সেই নির্বাচনে একটি স্বচ্ছ পার্লামেন্ট গঠন হবে, জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে কোন দিন কখনো কোন নির্বাচন সুষ্ট হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি পরিস্কার- মিথ্যা মামলা সাজাপ্রাপ্ত আমাদের নেত্রী দেশের মানুষের নয়ণেরমনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেবের সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা, সে সব মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আর অবিলম্বে সভা সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
শনিবার দুপুর ২টায় ময়মনসিংহের মাসকান্দা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীন মাঠে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে হত্যা, হামলা এবং মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সমাবেশ মঞ্চে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য একটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়।
ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলে নেতৃবৃন্দের সম্মতিক্রমে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর ঘোষণা দেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
সমাবেশ শুরুর কয়েক মিনিট পরে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঞ্চে আসন গ্রহন করে। এর পাশে একটি আসন খালি রাখা হয় দলের চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য।এর আগে সকাল থেকে ধানের শীষ ও জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা ও নেতাকর্মীদের ছবি সংবলিত ব্যনার হাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মাঠে অবস্থান নেয় নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম। এছাড়াও সমাবেশটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, আলমগীর মামুদ আলম ও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা, বাধা ছাড়াই শান্তিপুর্ণ পরিবেশে সমাবেশ শেষ হয়েছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞার নির্দেশে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে সমাবেশস্থল সহ সারা নগরীতে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলে। এছাড়া সাদা পোশাকধারী ও ডিবি পুলিশ মাঠে ছিল।
এসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন-একই সঙ্গে আমরা বলতে চাই আমরা যদি এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন করে একটি জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সবার আগে তরুনদের চাকরীর ব্যবস্থা করা হবে। জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে, জ্বালানী তেলের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে, গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে।