ময়মনসিংহের ভালুকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগে বিএনপি নেতা ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বহিষ্কারের পর তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে বিএনপি। মামলায় বাচ্চুসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
১ সেপ্টেম্বর (রোববার) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চু বলেছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিয়েছি। তবে যে অভিযোগ আমার প্রতি আনা হয়েছে এ ঘটনায় সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির গঠন করা হোক। তদন্তে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হলে আমার বিরুদ্ধে নেওয়া সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি।
৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দুপুরে রাজধানীতে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি বিএনপির একজন পরিক্ষিত কর্মী। যতদিন বেঁচে থাকব বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে মানুষের সেবা করে যাব এবং সামাজিক কাজ করব।
০২ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে দলের ত্রাণ তহবিলের দেওয়া ১০ লাখ টাকাও ফেরত দেওয়া হয়।
ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু বলেন, আমি দীর্ঘদিন বিএনপির একজন পরীক্ষিত কর্মী। দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপি করে সামাজিকভাবে সম্মানিত হয়ে আজকের এ পর্যায়ে এসেছি। আমাকে সম্মানিত করায়, বিভিন্ন সময় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করায় এবং তিন তিনবার বিএনপি দলীয় মনোনীত প্রার্থী করায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে নেওয়া দলীয় সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নিয়েছি। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হলে আমার বিরুদ্ধে নেওয়া সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দিয়ে বাচ্চু বলেন, ৫ আগস্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর দলীয় নেতাকর্মীসহ উপজেলা পরিষদ, থানাসহ সরকারি স্থাপনা দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষার জন্য দলীয় নেতাকর্মী দিয়ে পাহারা বসিয়েছি। বিনাভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও ভোটচোর এমপি উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র জনপ্রতিনিধিরা পালিয়ে যাওয়ার পর বিগত আন্দোলনে হামলাকারী সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ৫/৬টি মামলা দায়েরের ব্যবস্থা করেছি। ভালুকা উপজেলা একটি শিল্প ও কলকারখানা অধ্যুষিত এলাকা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয় তার জন্য স্থানীয় সব পক্ষ একত্রিত হয়ে প্রকৃত ব্যবসায়ী এবং বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতারা শিল্প প্রতিষ্ঠানে বৈধভাবে ব্যবসা করার জন্য আমার নিকট সুপারিশের আবেদন করেন। আর আমি স্থানীয় সমস্ত দলীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বৈধভাবে ও কোম্পানির নিয়মের মধ্যে ব্যবসা পরিচালনার সুপারিশ করেছি মাত্র। আমার পরিবারের এবং আত্মীয়-স্বজনের কাউকে এ ব্যবসায় যুক্ত করিনি।