ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে শূন্য আছে ময়মনসিংহের ত্রিশালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) পদ। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পাশের উপজেলার ইউএনওকে ত্রিশালের দায়িত্ব দেয়া হলেও অতি গুরুত্বপূর্ণ ছাড়া বাকি সব কাজ বন্ধ আছে। এর কারনে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে। সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দায়িত্বে কেউ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার জমিসংক্রান্ত কাজ।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানাযায়, গত ১ জানুয়ারি ত্রিশালের ইউএনও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল জাকির ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বদলি হন। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এরশাদ উদ্দিন ইউএনও হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। এর পর থেকে এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদ শূন্য রয়েছে।
আব্দুল্লাহ আল জাকির বদলি হওয়ার পর কিছুদিন ত্রিশালে ইউএনওর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন ভালুকার ইউএনও মাসুদ কামাল। এর কিছুদিন পরে তিনিও অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ায় ভালুকার ইউএনওর দায়িত্ব পালন করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোমেন শর্মা। ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ত্রিশালের ইউএনওর দায়িত্বও পালন করেন। তবে পরের দিন থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ত্রিশালের ইউএনওর দায়িত্ব পেয়েছেন ময়মনসিংহ সদরের ইউএনও হাফিজুর রহমান।
সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইউএনওকে। ত্রিশালে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ইউএনও না থাকার কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন দিবস উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে পালন করছেন।
ত্রিশাল ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী শাহজাহান কবীর ত্রিশাল প্রতিদিনকে বলেন, আমরা রুটিন কাজ করছি। আগে ভালুকার ইউএনও আসতেন। তিনি বিদেশ চলে যাওয়ার পর ময়মনসিংহ সদরের ইউএনও এসে কাজ করছেন। জরুরি কোনো প্রয়োজনে আমরা নিজেরা সদরে ইউএনওর কাছে যাচ্ছি।
এদিকে ত্রিশালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকার উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জমা-খারিজ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। প্রতিদিন ভূমি অফিসে এসে ফিরে যাচ্ছেন জমির মালিকরা। জমা-খারিজ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল নিবন্ধনও কমে গেছে। আগে এসব অফিসে দৈনিক যেখানে শতাধিক দলিল হতো, এখন সেখানে হচ্ছে অর্ধশত।
ত্রিশালে ইউএনও পদ খালি থাকার বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক বলেন, খুব দ্রুতই ইউএনও যোগদান করবেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে কথা বলব।
ত্রিশাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার জানান, শীর্ষ দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তা না থাকায় কিছুটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যেই তারা চলে আসবেন। ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, এখনো ত্রিশালে কাউকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। তবে খুব দ্রুত নিয়োগ দেয়া হবে।