ত্রিশালে বড়গাঁও দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের অনিয়ম

কামরুজ্জামান মিনহাজ::ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত বড়গাঁও দাখিল মাদ্রাসা কার্যক্রম নিজেদের মনগড়া নিয়মে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত মাদ্রাসার কার্যক্রম চলার কথা থাকলে এখানে চলছে ভিন্ন নিয়মে।

জানা গেছে, ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত এই মাদ্রাসার ১১জন শিক্ষক/ শিক্ষিকার এমপিও হয় । এই শিক্ষকদের প্রায় সকলেই থাকেন অনুপস্থিত । প্রতিদিন সকাল ১০ টায় মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু হলেও দুপুর ১ টায় একজন শিক্ষক এসে ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করে চলে যান ।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে সরেজমিনে মাদ্রায় গিয়ে ৬ জন ছাত্র আর ৪ জন ছাত্রী দেখা গেছে । স্থানীয়দের দেয়া তথ্য হচ্ছে, শিক্ষকরা নিয়মিত মাদ্রাসায় আসছে না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

স্থানীয় ছাত্র রায়হান জানান, সুপার আবুল মনসুর সারা বছর অসুস্থতা দেখিয়ে ছুটিতে থাকেন । সহকারি সুপার মোখলেছুর রহমান ২/১ দিন আসেন । সহকারি শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, বেলাল উদ্দিন, জেসমিন নাহার, রফিকুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, রুবিজা খাতুন, আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীর আলম, কুতুব উদ্দিন মাদ্রাসায় আসেন কালেভদ্রে । মাদ্রাসায় পাওয়া যায় দপ্তরি শরিফুল ইসলামকে । স্থানীয় মাহবুবুল ইসলাম জানান, শিক্ষকরা অনিয়মিত থাকার কারনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে । এই শিক্ষকরা ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন । কেউ হোমিও রোগী দেখেন আবার কেও গৃহস্থালি কাজ করেন । মাঝে মধ্যে মাদ্রাসায় আসেন লুঙ্গি পড়ে ।

সহকারি শিক্ষিকা রমিজা খাতুনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি একা মাদ্রাসায় এসে কি করবো ? অন্যরা আসেননা । সুপার হুজুর অসুস্থ । শিক্ষক আনিসুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সুপার সারাবছর ছুটি কাটান । এনিয়ে স্থানীয় অভিভাবকদের সাথে মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিরোধও চলছে।

যদিও শিক্ষকরা মাদ্রাসায় অনিয়মিত আসলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেখান হয় নিয়মিত। এতে শিক্ষকদের মধ্যে কোন সমস্যা হয় না। কারণ বাড়তি ছুটি সবাই একে অপরের সহযোগিতায় নিয়ে থাকে। মাদ্রাসায় চাকুরী করার মধ্যে অন্যকর্মে দায়িত্ব পালন করায় সুপারের প্রতি অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যে কারণে মাদ্রাসার কার্যক্রম আরো ব্যাহত হয়। নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় এসে যার যার মত করে এদিক ওদিক ঘুরাফেরা করে। এচিত্র সর্বত্র ।

ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম  জানান, এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে এসেছি । মাদ্রাসর বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।এদিকে মাদ্রাসায় সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, একটি সাইনবোর্ড পর্যন্ত নেই । মাদ্রাসার সকল অনিময় আর দুর্নীতির কারিগর সহকারী শিক্ষক আনিসুর রহমান ।