স্টাফ রিপোর্টারঃ পাঙ্গাশ মাছের খামার ও ব্যবসায়ী আলহাজ্ব জয়নাল আবেদিন।তিনি একাধারে একজন সফল ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ।ত্রিশালের রাজনৈতিক ইতিহাসে সাবেক সংসদ সদস্য,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল মতিন সরকার কে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পরাজিত করে রাজনৈতিকভাবে চমক সৃষ্টি করেন।
অপরদিকে ব্যবসায়ী হিসেবে পাঙ্গাস মাছের খামার ও চাষি হিসেবে ময়মনসিংহ বিপ্লব ঘটিয়েছে। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই সত্য, বছরে ২০ কোটি টাকার পাঙাশ মাছ বিক্রি করেন জয়নাল আবেদিন। ৬০ একর জমিতে ২০টি পুকুরে করছেন পাঙাশ চাষ। পরিশ্রম আর মনোবলকে কাজে লাগিয়ে বদলে ফেলেছেন ভাগ্যের চাকা। কিনেছেন জমি,গড়েছেন পাঁচ তলা বাড়ি। মাছ চাষিদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের কোনাবাড়ি এলাকার জয়নাল আবেদিন (৬০)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে পাঙাশ চাষ শুরু করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)। জয়নালের শুরু তখন থেকে। ওই সময়ে পাঙাশের যেমন চাহিদা ছিল, দামও ছিল সেরকম। ফলে দ্রুতসময়ে লাভের মুখ দেখেন জয়নাল। কোনাবাড়ি ফিসারিজ নামে গড়ে তুলেছেন মৎস্য খামার। বছরে দেড় থেকে দুই হাজার মেট্রিক টন পাঙাশ বিক্রি করেন। ২৬ বছর আগে চাষ শুরু করা জয়নালের মাসে দেড় কোটি টাকার ওপরে পাঙাশ মাছ বিক্রি হয়।
শুধু জয়নাল আবেদিন নন, অল্প পুঁজি নিয়ে মাছ চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন ত্রিশালের আবুল কালাম (৫৫) ও ভালুকার সাইফুল হুদা সোহাগসহ (৩৬) অনেক বেকার যুবক।
দেশে বছরে সাড়ে চার লাখ মেট্রিক টন পাঙাশ মাছ উৎপাদন হয়। এই উৎপাদনে ময়মনসিংহ থেকে জোগান আসে দুই লাখ মেট্রিক টন। জেলার ছয় হাজার ১৭৫ খামারি পাঙাশ উৎপাদন করে এই জোগান দেন। বেকার ও হতাশাগ্রস্ত যুবকদের অনুকরণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন এসব মাছ চাষি।
জয়নাল আবেদিন বলেন, শুরু থেকেই পাঙাশ মাছ চাষ লাভজনক ছিল। এ কারণে ময়মনসিংহের অনেকেই পাঙাশ চাষে আগ্রহী হন। আগে পাঙাশের পোনা জেলার বিভিন্ন হ্যাচারিতে পাওয়া যেতো। বর্তমানে বগুড়া ও শান্তাহার থেকে আনতে হয়। দুই বছর ধরে পাঙাশ দেশের বাইরে পাঠানো যাচ্ছে না। এ কারণে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত। রফতানি করতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, বছরে একবার মাছ ধরে বিক্রি করি। কোনও কোনও বছর ২০ কোটি টাকার ওপরেও বিক্রি হয়। তবে ওষুধ ও মাছের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন পাঙাশ চাষে তেমন লাভ নেই। তবে দাম কম হওয়ায় সব শ্রেণির মানুষ পাঙাশ কিনতে পারে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ পাঙাশ মাছ দিয়ে আমিষের চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। তরুণদের এসএমই ঋণ দিয়ে মাছ চাষে আগ্রহী করতে সরকার উদ্যোগ নিতে পারে। এতে বেকারত্বের হার হ্রাস পাবে এবং কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বাড়বে।