ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ১০ ইউনিয়নের সবখানে এখন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চলছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। তারাকান্দা উপজেলার ৭নং রামপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও স্বতন্ত্র দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। ১৭ই ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজিজুর রহমান (বুলে ডাঃ) এর বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারে বাধা,কেন্দ্র ভাংচুর,
কর্মীসমর্থকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ এমরান হোসেন আকন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আলহাজ্ব মোঃ এমরান হোসেন আকন্দ অভিযোগ করেন, রামপুর ইউপি নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আজিজুর রহমান (বুলে ডাঃ)তার নির্বাচনী প্রতীক আনারস প্রতীকের কেন্দ্র ভাংচুর,কর্মীসমর্থকদের হুমকি দেওয়াসহ নির্বাচনী প্রচার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছেন। পরে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিবেশ উপহার দেওয়ার দাবী জানিয়ে মানববন্ধন করলে মানববন্ধনে ইউনিয়নের বর্তমান মেম্বার এনায়েত কবীর এর সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বক্তব্য রাখেন- ইউনিয়নের সাবেক মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার চান মিয়া ফকির,সাবেক মেম্বার আলহাজ্ব আছাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা বজলুর রশিদ মন্ডল,ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান মুন্সি প্রমুখ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ এমরান হোসেন আকন্দ বলেন, ভোটাররা যাতে আনারস প্রতীকে ভোট দিতে না পারে সেজন্য নৌকার প্রার্থী ও তার লোকজন ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে বাড়ি বাড়ি সাধারণ ভোটারদের ভেতরে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। আমার নেতাকর্মীদের হাত পা কেটে নেওয়ার হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। আর এসব বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসক,জেলা পুলিশ সুপার,জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, তারাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দিয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আজিজুর রহমান (বুলে ডাঃ) বলেন, তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নৌকার বিজয় ঠেকানোর কৌশল হিসাবে তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীদের একজন আনারস প্রতীকের প্রার্থী মোঃ এমরান হোসেন আকন্দ মিথ্যাচার করছেন।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই আনারস প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন অনেক মটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়, যা নির্বাচনী আচরণ বর্হিভুত। শুধু নির্বাচনেই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন আমার নৌকা প্রতীকের ব্যানার,পোষ্টার ছিড়ে যে অপরাধ করেছেন তার সেই অপরাধ ঢাকতই আমার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করে চলেছেন,আর নির্বাচনের মাঠেও আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। তিনি বলেন- আমি গত ২০০২ সাল থেকে আমি এই ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের তারাকান্দা উপজেলা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্তপ্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এর নির্বাচনী এলাকা। উনার সহযোগিতায় ও দিকনির্দেশনায় আমি সভাপতি হিসাবে রামপুর ইউনিয়নে অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পন্ন করাসহ অনেক গরীব হত-দরিদ্র অসহায়দের সুযোগ সুবিধা দিতে পেরেছি। তবে দলের সভাপতি হিসাবে আমি কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। অপরদিকে আমার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ এমরান হোসেন আকন্দ একসময় জাতীয় পার্টি করতেন,পরে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বিএনপি করতো,এর পর ক্ষমতায় ক্ষমতায় আসলে তিনি আওয়ামীলীগে আসেন।তিনি একজন সুবিধা বাধী লোক,যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তিনি সে দলের হয়ে কাজ করেন। তিনি ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন এটাই স্বাভাবিক।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজাবে রহমত বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ইতিমধ্যে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।