ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই প্রতিবাদে একজোট মিজোরামের সব দল ও সংগঠন। এবার ভারতকে কোণঠাসা করতে চীনকে পাশে পেতে চায় মিজোরাম।
রাজ্যের বিভিন্ন শহরে ‘চীন জিন্দাবাদ’, ‘হ্যালো চায়না’, ‘বাই বাই ইন্ডিয়া’ স্লোগানে মিছিলে শামিল হন হাজার হাজার মানুষ। রাস্তায় রাস্তায় ছেয়ে গেছে চীনা ও ইংরেজি হরফে লেখা ভারতবিরোধী পোস্টারে। শনিবারের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানও বয়কটের ডাক দিয়েছে রাজ্যের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন মিজো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এমএসএ)। চীনের অঙ্গরাজ্য হওয়ারও দাবি তুলেছে মিজোরামবাসী। এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
বুধবার সকাল থেকে হঠাৎ করেই জ্বলে উঠে মিজোরামের বিভিন্ন শহরের রাজপথ। নর্থ ইস্ট স্টুডেন্ট অর্গানাইজেন (নেসো), মিজো জিরলাই পল (এমজেডপি) ও ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশনের (ওয়াইএমএ) ডাকে রাজপথে নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা।
শুধু রাজধানী আইজলে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩০ হাজার বিক্ষোভকারী। ৮ জানুয়ারি লোকসভায় পাস হওয়া নাগরিকত্ব বিলের (সংশোধনী) বিরুদ্ধেই গর্জে উঠেছে মিজোরাম। বিলের প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পার্সি, শিখ ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব দেবে সরকার। এতেই ক্ষুব্ধ মিজোরাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বার্থ কেন্দ্র দেখছে না বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
নাগরিক বিল সংশোধন না হলে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে সমর্থন দেবেন না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের এ নেতা বলেন, বিলটি বাতিল না হলে আমার সরকার এনডিএ’র পাশে থাকবে না।
এমএসএ’র সাধারণ সম্পাদক লালমাছুয়ানা বলেন, মিজোরামকে এ বিলের বাইরে না রাখা হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে। প্রজাতন্ত্র দিবসের যাবতীয় অনুষ্ঠান আমরা বয়কট করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে একাধিকবার প্রতিনিধি পাঠিয়েছি আমাদের দাবি তুলে ধরতে। তারা আমাদের কথা শুনতেই রাজি নন। এটাই যদি হয়, তাহলে আমরাও আর ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে চাই না। আমরা চীনের সঙ্গেই ভালো থাকব। কারণ চীনেও মঙ্গোলয়েড নামক একটি জাতি খুব ভালোভাবেই বসবাস করছে।
নেসোর অর্থসচিব রিকি লালবিয়াকমাওয়িয়া বলেন, মিজোদের মধ্যে এই ধারণাটা এখন স্পষ্ট যে ভারত আমাদের কথা ভাবে না, আমাদের কথা শোনে না। শুধু অনুপ্রবেশকারীদের কথা ভাবে। এ কারণেই আমরা চীনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নের কথা ভাবছি।
এমজেডপির সাধারণ সম্পাদক লালনুনওয়াইয়া পুতু বলেন, বিদেশিদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতেই হবে। আমাদের জন্মভূমিকে রক্ষা করতেই হবে। এই বিল বাতিল করতে বারবার অনুরোধ করছি সরকারের কাছে। সরকার যদি আমাদের কথা না শোনে, তাহলে আমরা মুখ বুজে থাকব না।
বৃহস্পতিবার আসামের গুয়াহাটিতেও একই রকম প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছিল অল আসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। সেখানেও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কংগ্রেস বিভিন্ন জেলায় জেলাশাসকের দফতরের সামনে অনশন চালায়।
অন্যদিকে আসাম আন্দোলনে শহীদ ৮৫৫ জনের পরিবারকে রাজ্য সরকার যে স্মারক দিয়েছিল, তা ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। ৩১ জানুয়ারির আগেই স্মারক ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেজপুর শহীদ পরিবার সমন্বয়রক্ষী পরিষদ। -যমুনা টিভি।