আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাদকের বিরুদ্ধে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের যুদ্ধে নিহত হয়েছের অন্তত পাঁচ হাজার সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী। সেই দুতার্তেই সম্প্রতি জানালেন, ঘুম তাড়ানোর জন্য তিনি গাঁজা সেবন করে থাকেন। পরে অবশ্য এ কথা ফিরিয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ওটা রসিকতা ছিল।
প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের ২০১৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। তার এ ঘোষণা থেকে হাজারও সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী ও আসক্ত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এজন্য দেশে ও বিদেশে চরম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে।
গত মাসে সিঙ্গাপুরের আসিয়ান সম্মেলন অংশ নেন দুতার্তে। সেখানে একের পর এক বৈঠকে অংশ নিতে হয় রদ্রিগো দুতার্তেকে। তবে ঘুমিয়ে পড়ায় কয়েকটি বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মুখপাত্র স্যালভাদর পানেলো।সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে গত সোমবার ফিলিপাইনে এক অনুষ্ঠানে দুতার্তে বলেন, ‘আমার যাতে ঘুম না পায় সেজন্য গাঁজা টানি।’ অবশ্য বক্তব্যের পর তিনি এটাকে ‘রসিকতা’ হিসেবে অভিহিত করেন।
সিঙ্গাপুরের বৈঠকের পর গাঁজা সেবন প্রসঙ্গে ৭৩ বছর বয়সী দুতার্তে বলেন, ‘এটা অবশ্যই ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম। আর আমার এ বয়সে এটা সেবন করা আরও কঠিন কিছু। অন্যদের পক্ষে এই বয়সে গাঁজা সেবন করা সম্ভব না। তবে চাপ থেকে মুক্ত থাকতে আমি গাঁজা সেবন করি।’
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক কার্লোস কন্ডে দুতার্তের রসিকতার সমালোচনা করে বলেছেন, এটা নিশ্চিতভাবেই (হতাহত ব্যক্তিদের) পরিবারকে আরও বিক্ষুব্ধ করে তুলবে। প্রেসিডেন্ট যা করার কথা স্বীকার করেছেন এবং এবং মাদকসেবীদের সঙ্গে তিনি যা করার ঘোষণা দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। প্রেসিডেন্ট যদি রসিকতা করতে গিয়েও সত্যি কথা স্বীকার করে ফেলেন, তাহলে পুরো বিষয়টিরই বিশ্বস্ততা নষ্ট হয়।
তবে দুতার্তের এ মন্তব্যের পক্ষ নিয়ে তার মুখপাত্র স্যালভাদর পানেলো বলেছেন, সবাই রসিকতা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট রসিকতা করলে দোষ কী? তিনি মাঝে মধ্যে রসিকতা করেন, কারণ অনেক সময় ইভেন্টগুলো খুব বিরক্তিকর হয়ে থাকে। তাই বিরক্তি কাটাতেই মজা করেন তিনি। আর গাঁজা সেবন করলেই যে মানুষের ঘুম আসে তা শতভাগ সত্য নয়। এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। তিনি মজা করেছেন মাত্র।
প্রেসিডেন্টের এমন রসিকতা যুব সমাজের ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে-এমন আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে মুখপাত্র বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের একটা মাত্র রসিকতা প্রমাণ করে না যে, তিনি একজন খারাপ নেতা।