গণধর্ষণে ডিবির টিম জড়িত, মেয়েটিকে মনে করেছিল গার্মেন্টস শ্রমিক – ডাঃতুহিন মালিক

বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষনের যে আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে তা নিয়ে ফেইস বুকে নানা রকমের সমালোচনার মাঝে এটা কতটা গ্রহন যোগ্য বিবেচনা আপনার কাছে।

“সুঠামদেহী যুবকের আচরণ দেখে বেশ প্রভাবশালী মনে হয়েছিলো। ওই যুবক বারবার ছাত্রীর পরিচয় জানতে চেয়েছিলো, তখন বেশ ভয় পান নির্যাতিতা।” (মানবজমিন, ৭ জানুয়ারী ২০২০)

মেয়েটি প্রথম দিন বলেছিলো – পরিচয় বললে ঝামেলা হতো , হত্যা ও করতে পারতো।
তাহলে কি বুঝলেন ? বাহিনীর নামটি নিশ্চয় মেয়েটি বলেছে , কিন্তু পুলিশ হুমকি দিয়ে থামিয়ে দেয় নাই ?

এখন পর্যন্ত যা মিডিয়াতে প্রকাশিত হচ্ছে সব পুলিশের বক্তব্য। মেয়েটি বা তার মামলার বাদী প্রকাশ্য কিছুই জানান নাই। আটক মজনুর ঠিকানা ও ভুয়া প্রমাণিত হবে। এবং সে মানসিক সুস্থ কি না সেটাও সন্দেহজনক

ঢাবি ছাত্রীকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়েছিল ডিবির একটি গ্রূপ। অজ্ঞান করে গণধর্ষণ করে পুরো টিম। তাদের সাথে যুক্ত হয় গুলশানে থাকা ডিবির সঙ্গী ভারতীয় র য়ের একজন এজেন্ট। ধর্ষণের পর তার শরীরে ইনজেকশন পুশ করা হয়। ধর্ষণকারীরা মনে করেছিল মেয়েটি গার্মেন্টস শ্রমিক।

পুরো বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার দায়িত্বই পরে ডিএমপির গুলশান জোনের উপ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী উপর। এর পর সাজানো হয় পুরো কাহিনী।

অপরাধের ঘটনা স্থল থেকে উদ্ধার করা শার্ট ছিল দামি এবং আয়রন করা পরিষ্কার। যা একজন ছিন্নমূল মাদকাসক্ত ব্যক্তির গায়ে ছিল না। মজনুকে আটকের পর যে গ্যাঞ্জি পরানো হয়েছে সেটা পুলিশের দেয়া।

ডিএমপির গুলশান জোনের উপ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী কি তাহলে নিজেই অপরাধের সাথে জড়িত। কারণ তিনি নিজেই এসাইন করে একটি ডিবির টিমকে সেখানে রেখেছিলেন ডিউটির জন্য। এরাই ধর্ষণ করে। এর গায়ে মেয়েটির পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা করে ওই গ্রূপ। ডিবির ওই টিমের পিডি কপি (দায়িত্বের স্থান / সময়ের তালিকা ) গুলশান জোনের উপ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর কাছে রয়েছে।

ধর্ষণের শিকার মেয়েটির শারীরিক অবস্থা উন্নতি হয়েছে। ২/৩ দিনের ভেতরে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হবে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন।

কিছুদিন পরেই আমার পরীক্ষা। আমি পরীক্ষা দেবো তোমরা ব্যবস্থা করো। পরিবারের সদস্যদের এমনটিই জানিয়েছেন কুর্মিটোলায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়লেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এখন পুরোপুরি ভালো আছেন। তার মানসিক অবস্থা অত্যন্ত দৃঢ়।ওই ছাত্রীর পরিবারের একজন সদস্য জানান, সকালেও আমি তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি। সে আমার পায়ে ধরে সালাম করেছে। আমরা নিজেরা স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছি। তাকে সর্বদা সাহস যোগানোর চেষ্টা করছি। তার মা প্রথম দিকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়লেও এখন সে যথেষ্ট ঠিক আছে। সে সারাক্ষণই মেয়ের সঙ্গে আছে। ( দৈনিক মানবজমিন প্রথম পাতা ৯ জানুয়ারি ২০২০)

“সুঠামদেহী যুবকের আচরণ দেখে বেশ প্রভাবশালী মনে হয়েছিলো। ওই যুবক বারবার ছাত্রীর পরিচয় জানতে চেয়েছিলো, তখন বেশ ভয় পান নির্যাতিতা।” (মানবজমিন, ৭ জানুয়ারী ২০২০)

বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় এসব কোন যাযাবর ছিন্নমূল মাদকাসক্ত ব্যক্তির পক্ষে অসম্ভব।

মেয়েটার আগের বর্ণনায় কোথাও ছিলোনা যে, ধর্ষকের সামনের দুইটা দাঁত নাই। এইটা অনেক জরূরী তথ্য। মেয়েটা যতোটুকু সম্ভব মোটামুটি বলছে , তাতে এই বর্ণনা ছিলোনা। অথচ মজনু নামের ধর্ষকের সামনের দুইটা দাঁত নাই। দীর্ঘদিন মাদক নিলে দাঁত পড়ে যায়। তবে যে পর্যায়ে গেলে দাঁত পড়ে যায়, সেই পর্যায়ে চলে গেলে ধর্ষণ তো দূরের কথা নিজেরে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক চলাচলের যোগ্য রাখতে পারে না।নিজেকে তোলার ক্ষমতাও মাদকাসক্ত ব্যাক্তির থাকেনা।

র‌্যাবের কিছু কথা –
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে জোর করে রাস্তা থেকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে গিয়েছিল ধর্ষক মজনু। বুধবার দুপুরে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘মজনু ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করেনি। মূলত সে মেয়েটাকে ফলো করছিল। আর আপনারা দেখেছেন যে আমাদের ভিকটিম কিন্তু ক্ষীণকায়। তাকে সে পাঁজাকোলা করেই নিয়ে যায়।’

মজনু নাটকের পূর্বে পুলিশের কিছু কথা –

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধার: এদিকে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ঢাবির ওই শিক্ষার্থী যে স্থানে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ওই স্থানের আশেপাশের দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। এখন ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ডিএমপির গুলশান জোনের উপ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের কিছু ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ধর্ষককে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করাই সবার লক্ষ্য। আশা করছি সেটা সম্ভভ হবে। প্রথম থেকেই মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সোমবার রাতে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ভুক্তভুগি মেয়েটি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন :- শিক্ষার্থী ঢাবির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী -অর্থাৎ মেয়েটি ঢাকা বা ঢাকার আসে -পাশের বাসিন্দা না হলে ধরে নেওয়া যায় “মেয়েটি ঢাকা শহর সম্পর্কে খুব-একটা জ্ঞাত নয় -যদি তাই হয় তবে “সে কি করে এই শীতের বিকাল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে( যদি হোস্টেলের আবাসিক ছাত্রী হয়ে থাকে তবে হোস্টেলে ফিরে আসার সময় এবং হোস্টেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন ) বন্ধু’র বাসায় যায় ?

যে শীতের বিকাল ৫টায় রওনা দেয় তার রাস্তা ভুলে যাওয়ার কথা নয় ! কারণ সে জানতো সন্ধ্যা /রাত হবে সুতরাং যে বন্ধুর উদ্দেশ্যে রওনা হলেও ” বাসের ভিতরে অবশ্যেই মোবাইলে যোগাযোগ হয়েছে ঘনঘন , যেহেতু সে রাস্তা-ঘাট চেনেন না (খবরে বলেছে রাস্তা ভুল করে কুর্মিটোলার বাসস্ট্যান্ডে নামেন এর পরিপেক্ষিতে এটি বলা ) চলন্ত অবস্থায় বন্ধু’র সাথে যোগাযোগ থাকলে -এমন ভুল হওয়ার কথা নয় -আবার দুর্ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পর রাত ১০-টায় এই মেয়েটি কিন্তু একা একা সিএনজি (ওই এলাকায় কারো সাহায্য ছাড়া শীতের রাত ১০টায় হঠাৎ সিএনজি পাওয়াটাও প্রায় অসম্ভব ) সংগ্রহ এবং বন্ধুর বাসায় উপস্থিত হওয়ায় অস্পষ্ট ….?

সব মিলিয়ে “এলাকাটি বাহিনীর অধীনে -এখানে বাহির থেকে আসে অবস্থান করার সাহস পাবে না -পেলেও এভাবে টেনে-হিচড়ে -সড়কের পাশেই “ধর্ষণ ” ! এটি তার পক্ষেই সম্ভব ?

এ ঘটনায় উদ্ধারকৃত ফুটেজ পাশ্ববর্তী দুটি প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার। এতে অনেকের আসা-যাওয়ার চিত্র রয়েছে। সেখান ওই যুবকের অবস্থান খুঁজে বের করতে চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েক জনের ছবি সঙ্গে মেলানো হচ্ছে। তবে ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, ফুটেজের ছবি অস্পষ্ট। তবুও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। (মানবজমিন প্রথম পাতা ৮ জানুয়ারি ২০২০)

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ধর্ষণের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তির আগে ও পরে কয়েকজন শিক্ষক ও বন্ধুকে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।

ঘটনাস্থল দেখে পুলিশ বলছে, নিজেকে বাঁচাতে প্রবল চেষ্টা করেছেন ওই ছাত্রী। ভিকটিম জানিয়েছেন, ধর্ষক তার পরিচয় জানতে চেয়েছে বারবার। তিনি আন্দাজ করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় পেলে তাকে মেরে ফেলা হতে পারে। তাই তিনি মুখ খোলেনি। (যুগান্তর রিপোর্ট প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২০)

রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় সড়কের পাশের দুটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। যুগান্তর রিপোর্টপ্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২০

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এ কথা জানান পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

তিনি বলেন, ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করা হবে।

ডিসি সুদীপ কুমার আরও বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের দুটি সিসিটিভির ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেগুলো তদন্ত করা হচ্ছে।

ফরেনসিক রিপোর্টের আগেই মজনু ধর্ষক ?

বিষয়ে ঢামেক’র ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার গলায় চেপে ধরার চিহ্ন পাওয়া গেছে। নখের আচড় রয়েছে। এছাড়াও হাতে, পায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন আছে। কিছু আলামত ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ওই পরীক্ষার রিপোর্ট পেলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে মেয়েটি একাধিক ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি-না।

ঠাণ্ডা মাথায় যে ধর্ষণের মতো অপরাধ ঘটিয়েছে একাধিকবার এবং মেয়েটিকে জোর করে পোশাকও পরিবর্তন করিয়েছে, আবার ধর্ষণ করেছে।

– ডাঃ তুহিন মালিকের একাউন্ট থেকে নেয়া।