আন্তর্জাতিকঃ গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অগণতান্ত্রিক পন্থায় নানা মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। আর তাতে মার্কিন প্রশাসনের সরকারি নীতি (জিওপি) নিয়ে দেশের মধ্যে সৃষ্ট বিভক্তি অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। কিন্তু এখন মার্কিন প্রশাসনের নেতৃত্বে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এখন তাঁর দলের মধ্যেই মতবিরোধ দানা বেঁধে উঠছে।
এর কারণ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রেরের মতি ব্রমের বিষয়টি। ডেমোক্র্যাটরা মানবাধিকার নিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিশ্রুতি ব্যপারে প্রশ্ন তুলছেন। তারা বলছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর অব্যাহত হামলা বন্ধে ইসরায়েলের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে। খবর সিএনএনের।
কেননা গত নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা সামাজিক ও বর্ণবাদী বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকে তাদের অন্যতম অ্যাজেন্ডা হিসেবে প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দেশটি বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন পন্থায় বর্ণবাদের খপ্পরে পড়েছে। এখন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সংঘাতে উদারপন্থীরা চান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে ন্যায়বিচারের ধারণার প্রয়োগ। ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েল বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে—এই মতের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান হারে জনমত সৃষ্টি হচ্ছে।
ইসরায়েলের আগ্রাসী হয়ে ওঠা ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে পূর্ব জেরুজালেমের আশপাশের এলাকা থেকে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে উচ্ছেদে ইসরায়েলি পরিকল্পনার প্রকাশ্য নিন্দা না জানানোয় ব্যক্তিগতভাবে বাইডেনের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁরা।
গত শনিবার দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে কথা বললেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। কিন্তু তার কথার ইঙ্গিতে বোঝালেন চলতি ইস্যুতে নিজেকে ইসরাইলের সাথে সম্পৃক্ত করার।কিন্তু উদারপন্থী ডেমোক্র্যাটরা চান ইসরায়েলের আগ্রাসন নিয়ে তিনি যেন প্রকাশ্য বিবৃতি দেন। কিন্তু অন্তত প্রকাশ্যে এখন পর্যন্ত তিনি এ রকম কোনো অবস্থান গ্রহণ করা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় এক সপ্তাহে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে হাজারের বেশি। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ইহুদিদের সঙ্গে স্থানীয় আরবদের সহিংসতা শুরু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ জানতে চান, ‘ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার অধিকার আছে কি?’ তিনি টুইটারে লেখেন, যদি বাইডেন প্রশাসন কোনো মিত্রের (ফিলিস্তিন) পাশে দাঁড়াতে না পারে, তবে কে দাঁড়াতে পারবে? তারা (প্রশাসন) কীভাবে মানবাধিকারের পাশে দাঁড়ানোর গ্রহণযোগ্য দাবি করতে পারে?
এদিকে মিশিগান প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য রাশিদা তায়েব বলেন-ইসরায়েল গণমাধ্যমকে নিশানা করছে, যাতে বর্ণবাদী নেতা নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে দেশটির যুদ্ধাপরাধ বিশ্ব দেখতে না পারে। বাইডেন প্রশাসনের প্রতি নানাভাবে ক্ষোভ জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন, সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সসহ আরও অনেকে।