ত্রিশাল প্রতিদিন ডেস্ক:: বর্তমানে স্মার্টফোন অতি প্রয়োজনীয় হলেও একই সঙ্গে প্রবল ক্ষতিকরও। এমনটাই মত বিজ্ঞানীদের। অনেকেই আছেন যারা মোবাইল ফোন দ্বারা নেশাগ্রস্ত। এক সেকেন্ডের জন্যও ফোন থেকে দূরে থাকেন না। আর এই নেশাগ্রস্তদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মদ, গাঁজা, হেরোইনের মত এই নেশাও ভয়ঙ্কর বলে মত বিজ্ঞানীদের।
গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, যারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ঘাঁটছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিয়েছে। দুর্বল হয়ে তারা খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিজ্ঞানীদের দাবি, মোবাইল ফোনের নেশা ভিডিও গেমস, ইন্টারনেট ব্যবহার নেশার চেয়েও খারাপ। ২৪ ঘন্টাই মানুষ বুঁদ হয়ে থাকছেন স্মার্টফোনে।
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোনের ব্যবহার দ্রুত বেড়ে চলেছে। যা বিশেষ করে এই জেনারেশানের যুবসম্প্রদায়ের কাছে একপ্রকার নেশার আকার ধারণ করেছে। দৈনন্দিন জীবনযাপনে অনিয়ম তৈরি হয়ে গিয়েছে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। স্মার্ট ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে ৮০% মানুষের। রাতজেগে নানান অ্যাপস, ফেসবুক, ট্যুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি নিয়ে খুটখাট করার ফলে কমে যাচ্ছে ঘুমের পরিমাণ। দেখা দিচ্ছে অনিদ্রা।
ই-মেল, ফোন কলস ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফোনের সাথে থাকায় স্মার্টফোন আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। অতিরিক্ত ফোনের ব্যবহারের ফলে ঘুম ঠিকঠাক হয় না। ঘুমানোর সময় কমে যাওয়ার ফলে নানান সমস্যা দেখা দেয়। ঘুম ঠিক না হলে কাজের এনার্জি থাকে না, সারাদিন মুড খারাপ থাকে। পজিটিভ ভাব কাজ করে না। যা খুবই ক্ষতিকারক প্রমানিত হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, নামোফবিয়া হল একধনের ফোন ঘটিত অবসাদের সমস্যা যা ফোন থেকে হয়। কোনো ব্যাক্তি ফোন দ্বারা অতিরিক্ত নেশাগ্রস্ত, কোনও কারণে ফোন সুইচঅফ হয়ে গেল বা কাছের থেকে ফোন হারিয়ে গেল তখন সেই ব্যাক্তি একধরণের অবসাদে ভোগে। পাগল পাগল অবস্থা হয় সেই ব্যক্তির।
গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, অতিরিক্ত ফোনের ব্যবহার মানুষের মস্তিষ্কে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। মানুষ পাগল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। ফোন থেকে বেরোনো রেডিয়েশন ব্রেনে প্রভাব ফেলে। যা থেকে টিউমার ও পরে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা থাকে।
অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিভাবে কমাবেন:
১। কাজের সময় ছাড়া ই-মেল চেক করবেন না। কাজের সময় বাদে বাকি সময় মেল আইডি বন্ধ করে রাখবেন।
২। খাবার সময় ফোন কাছে না রাখার চেষ্টা করুন। যদি থাকে তাহলে তা পকেটে রাখুন।
৩। অ্যাডিশনাল অ্যাপ্লিকেশন ফোন থেকে ডিলিট করে দিন।
৪। ফোনকে অ্যালার্ম ক্লক হিসেবে ব্যবহার করবেন না।
৫। বাথরুমে ফোন নিয়ে যাবেন না। এমনকি, বেডরুমে ঘুমানোর সময় ফোন না নিয়ে যেতে চেষ্টা করবেন।
এখন থেকে সতর্ক হলে ফোন থেকে হওয়া সমস্যা কমে আসবে। অনিদ্রার সমস্যা থাকবে না। ফোনের মায়াবী দুনিয়া থেকে বাস্তবে বেরিয়ে আসুন। যন্ত্রের মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে আসল পৃথিবীকে ভুলে যাবেন না। তাতে সুস্থ থাকবেন আপনি নিজেই।